হেফাজতে নারীর মৃত্যু নিয়ে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের উদ্বেগ




আসকগাজীপুর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে নারীর মৃত্যু নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ উদ্বেগ ও দাবি জানানো হয়। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টার দিকে বাড়ি থেকে ধরে নেওয়ার তিন ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ হেফাজতে ওই নারীর মৃত্যু হয়। তার পরিবারের দাবি তাকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।

আসক থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১৮ ফেব্রুয়ারি (২০২০) ডিবি পুলিশের একদল সদস্য নিহতের বাড়িতে যায় তার স্বামীর খোঁজে। ওইসময় স্বামীকে না পেয়ে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশের দাবি, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতেই নিহতের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। নিহত নারী ও তার স্বামী দু’জনই মাদক ব্যবসায়ী এবং তাদের বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা আছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশের দাবি, ‘অভিযানের সময় নিহতের কাছ থেকে ১০০ পিস ইয়াবা উদ্ধারের পর তাকে আটক করা হয়। আটকের পরপর সে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই নারী মারা যান।’

তবে নিহতের পরিবার দাবি করছে, পুলিশের নির্যাতনের কারণেই ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে।

আসক আরও জানায়, হেফাজতে মৃত্যু ও নির্যাতনের অভিযোগের বিচারে ২০১৩ সালে হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু (নিবারণ) আইন প্রণয়ন করা হয়। কিন্তু এ আইনের আওতায় এখন পর্যন্ত কোনও মামলার বিচার প্রক্রিয়া শেষ হয়নি। অন্যদিকে ২০১৯ সালের জুলাই মাসে জেনেভায় জাতিসংঘের নির্যাতনবিরোধী কমিটি এ সংক্রান্ত সনদ বাস্তবায়নে বাংলাদেশের অগ্রগতি পর্যালোচনা করে।

পর্যালোচনা শেষে কমিটির দেওয়া সুপারিশগুলোতে নির্যাতনের অভিযোগ তদন্তে নিজ বাহিনীর বাইরে নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। একইসঙ্গে ডাক্তারি পরীক্ষা, সাক্ষ্যগ্রহণ ও বিচারের পুরো প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও নিরপেক্ষতা বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।

নারীর নিহতের ঘটনা তদন্তে দ্রুততার সঙ্গে তিন সদস্যের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি গঠনকে সাধুবাদ জানালেও আইন ও সালিশ কেন্দ্র বিশ্বাস করে, এ ধরনের ঘটনার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে বাহিনীর বাইরে থেকে বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া দরকার। আসক নির্যাতনের শিকার ও হেফাজতে মৃত ব্যক্তিদের পরিবার থেকে আসা অভিযোগগুলো আমলে নিয়ে অভিযোগ তদন্তে নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছে।