বইমেলায় বিদায়ের সুর

বইমেলা (ফাইল ছবি)

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীকে উৎসর্গ করে এবার ২ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়েছিল অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২০। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কিছু অংশ নিয়ে মাসব্যাপী এই মেলা ইতোমধ্যে পার করেছে ২৬ দিন। বৃহস্পতিবারের (২৭ ফেব্রুয়ারি) পর মেলা ভাঙতে বাকি আছে আর মাত্র দু’দিন। এরপরই শেষ হবে লেখক, পাঠক ও প্রকাশকদের প্রাণবন্ত আড্ডার মিলনমেলা।

পাঠকরা বলছেন, মেলা দেখতে দেখতে যে মাস পার হয়ে গেলো সেটাই বুঝবার উপায় নেই। মনে হয়, আরও দীর্ঘ সময় থাকুক এই মেলা। কারণ সারাবছর বই কেনার সুযোগ থাকলেও শুধু মেলাতেই লেখক-পাঠক-প্রকাশকদের মিলনমেলা ঘটে।

মেলায় আগত পাঠক ইলা ফারজান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এবার বইমেলায় বেশ কয়েকবার আসা হয়েছে। পছন্দের অনেক বইও কিনে ফেলেছি ইতোমধ্যে। সঙ্গে পছন্দের লেখকদের অটোগ্রাফও নিয়েছি। মেলার আর ২ দিন বাকি। একটু খারাপ লাগছে। এতো সুন্দর একটা মিলনমেলার জন্য আবারও এক বছর অপেক্ষা করতে হবে।’

আফসি খান বলেন, ‘মেলা থেকে অনেক বই কিনেছি, সারাবছর পড়বো এগুলো। বিদায় সময়ে খারাপই লাগছে। কারণ, বন্ধুদের সঙ্গে হই-হুল্লোড় করে মেলায় অনেক ঘুরেছি। অনেক প্রিয় লেখকের দেখা পেয়েছি।’

এদিকে প্রকাশকরা বলছেন, আশা করা যাচ্ছে আগামী শুক্র ও শনিবার মেলার শেষ দুদিন দ্বিগুণ বিক্রি হবে। তবে এই বছরের মেলা অনেক গোছানো ছিল।

সময় প্রকাশনীর প্রকাশক ফরিদ আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মেলা অনেক ভালো হয়েছে, মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে মেলায় চলাফেরা করতে পেরেছে। তবে যত মানুষ মেলায় এসেছে, সেই পরিমাণ বিক্রি হয়নি। আশা করছি শেষ দুই দিনে ভালো বিক্রি হবে।’

একই কথা বলেছেন অন্যপ্রকাশের প্রকাশক মাজহারুল ইসলামও। তিনিও শেষ দুদিন ভালো বিক্রির আশা প্রকাশ করেছেন।

পেণ্ডুলাম পাবলিশার্সের প্রকাশক রুম্মান তার্শফিক বলেন, ‘মেলা সত্যিই অনেক গোছানো ছিল। মেলায় আগতরা খুবই সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। শুরু থেকে বিক্রি মোটামুটি ভালো হয়েছে। তবে আশানুরূপ বিক্রি হয়নি। আগামী দুদিন বিক্রি দ্বিগুণ হতে পারে।’

পুথিনিলয় এর প্রকাশক শ্যামল পাল বলেন, ‘মাসব্যাপী যে মেলায় পাঠকদের যাতায়াত ছিল, এটি অনেক বড় কিছু। খুব বই বিক্রি না হোক, পাঠকরা বইয়ের সঙ্গে ছিল। হয়তো আগামী দুদিন তারা বই কিনবেন এবং ভালো বিক্রি হবে।’

মেলার নিরাপত্তায় ডিএমপির পক্ষ থেকে মাসব্যাপী দায়িত্বে ছিলেন শাহবাগ থানার সাব-ইন্সপেক্টর শফিউল আলম। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা সারা মাস চেষ্টা করেছি যেন মেলায় কোনও ধরনের বিশৃঙ্খলা তৈরি না হয়। আমাদের কর্মীরা মাসব্যাপী সার্বক্ষণিক তদারকি করেছে। যার ফলে এখন পর্যন্ত কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আশা করছি শেষ পর্যন্ত কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না।’

বাংলা একাডেমির পরিচালক ও মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব জালাল আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সবাই বলেছে মেলা ভালো হয়েছে, সেই হিসেবে আমরাও খুশি এমন একটি মেলা আয়োজন করতে পেরে। আমরা আগামী বছর এবারের মেলার ওপর ভিত্তি করে ভালো এবং নান্দনিক বইমেলা করতে চাই। আমাদের লক্ষ্য আকাশ পর্যন্ত পৌঁছানো।’