জবি শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়ন, মামলা না নেওয়ায় সড়ক অবরোধ

গণপরিবহনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এক নারী শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় ও পুলিশ কর্তৃক মামলা না নেওয়ার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। সোমবার (৯ মার্চ) দুপুর আড়াইটা নাগাদ ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনের সদরঘাটগামী জনসন রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এতে সদরঘাট এলাকায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের হস্তক্ষেপে ৩টার দিকে শিক্ষার্থীরা সড়ক ছেড়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

এর আগে, ক্যাম্পাসের শহীদ মিনারের সামনে ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধনে অংশ নেন শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধনে জবির ৭ দফা আন্দোলনের সংগঠক তাওসিব সোহান বলেন, গত শুক্রবার আমাদের এক বোনের শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছে। নারী দিবসের দিন আরও এক বোনের সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মামলা নিতে পুলিশের টালবাহানা কখনই কাম্য নয়। আমার সবাই নির্যাতিত বোনকে অনুরোধ করবো, কোনও ঘটনায় চুপ করে থাকবেন না, আওয়াজ তুললেই এসব ঘটনার সমাধান হবে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, রবিবার (৮ মার্চ) আজিমপুর থেকে বাবার সঙ্গে আমি মিরপুর লিংক নামে একটি বাসে তালতলায় বাসায় ফিরছিলাম। রাত ১০টার দিকে তালতলার কাছাকাছি বাসটি পৌঁছালে আমার পেছনের সিটে বসা এক ব্যক্তি সিটের পাশ আমার শরীরে আপত্তিকরভাবে হাত দেয়। এসময় আমি চিৎকার করলে বাসের সবাই এগিয়ে আসে, আমি তার হাত থেকে তার মোবাইল ছিনিয়ে নিই। পরে তালতলা পেট্রল পাম্পে বাস থামলে সে ভিড়ের মধ্য থেকে দৌড়ে পালিয়ে যায়।

মামলা না নেওয়ার বিষয়ে ভুক্তভোগী বলেন, রাত সাড়ে ১১টার দিকে আমি শেরে বাংলা থানায় মামলা করতে গেলে ওনার বলেন, এ ধরনের ঘটনায় মামলা হয় না। পরে উনারা আমাকে অভিযোগ দিতে বলেন। আমি অভিযোগ লেখার পর তারা আমাকে অভিযোগের কোনও কপি বা স্লিপ দিতে রাজি হয়নি। পরে আমি প্রতিবাদ করলে অভিযোগপত্রের ছবি তুলতে দেওয়া হয়। কেড়ে নেওয়া ফোনটা আমি থানায় দিয়েছি।

পরবর্তীতে দুপুরে আমাকে থানা থেকে ফোন দেওয়া হলে আমি বলি আমার মামলা নেওয়া হয়নি, তাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মামলা করবে। এরপর আড়াইটার দিকে আমি একটা বার্তা পাই। তাতে মামলা হয়েছে বলে জানানো হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল বলেন, আমি সংশ্লিষ্ট থানায় যোগাযোগ করেছি, পুলিশ মামলা নিয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে শেরে বাংলা থানার ওসি জানে আলম মুন্সি বলেন, মামলা নেওয়া হয়নি এটা মিথ্যা কথা। তাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে মামলা নেওয়া হয়েছে।

গতকাল রাতে মামলা না নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, গতকাল রাতে নেওয়া হয়নি, কারণ এটার একটা প্রক্রিয়া আছে। প্রোপার নিয়মেই মামলাটা নেওয়া হয়েছে।