দ্রুত ঢাবি বন্ধ ঘোষণার দাবি ডাকসুর, ক্লাস বর্জন বুয়েট-মেডিক্যাল শিক্ষার্থীদের

ডাকসু (ছবি: সাজ্জাদ হোসেন)

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী দুই দফা দেশে শনাক্ত হয়েছে। তাই শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাময়িক বন্ধ রাখতে উপাচার্যের কাছে দাবি জানিয়েছে ডাকসু। শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে আজ রবিবার (১৫ মার্চ) এ দাবি জানান তারা। এদিকে, বুয়েট-মেডিক্যালের শিক্ষার্থীরাও ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে বাড়ি চলে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। 

একই দাবিতে শনিবার রাত ৮টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনশন কর্মসূচি পালন করেন পাঁচজন শিক্ষার্থী। পরে বিকাল ৫টায় প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী তাদের অনশন ভাঙান। 

ইতোমধ্যে বিভিন্ন বিভাগের রুটিনভুক্ত পরীক্ষা বয়কট করেছেন শিক্ষার্থীরা। ভাইরাস জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকেই সতর্কতা হিসেবে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে যাচ্ছেন না তারা।

করোনা প্রতিরোধে ডাকসুর দাবি:

১. বিশ্ববিদ্যালয় সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করা কিংবা গ্রীষ্মকালীন ছুটি এগিয়ে আনা

২. বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যেকোনও প্রকার রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সভা-সমাবেশ, উৎসব অনুষ্ঠান, সেমিনার পুর্নমিলনী আয়োজন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা প্রভৃতির ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ করা

৩. আবাসিক হলগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, হ্যান্ডওয়াশ, সাবানের ব্যবস্থা করা এবং হলের সার্বিক পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিতকরণে সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান। আবাসিক শিক্ষকদের প্রতিদিন খোঁজখবর নেওয়ার ব্যবস্থা করা

৪. অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে আপৎকালীন মেডিক্যাল ইউনিট স্থাপন করা

৫. বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় গণজমায়েত ও গণপরিবহন নিয়ন্ত্রণ করা।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ডাকসুর সহ-সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রশাসন যেন সাময়িকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে বা গ্রীষ্মকালীন ছুটি এগিয়ে আনে ডাকসুর পক্ষ থেকে এ দাবি আমরা করেছি। শুধুই সেটাই যথেষ্ট নয়, একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে একটি কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে দাবি জানিয়েছি। গণরুমগুলোতে যেন হ্যান্ডওয়াশ এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজারের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখা হয়। উপাচার্য এ বিষয়ে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সকলের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবেন।’

বুয়েট-মেডিক্যালেও ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন:

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিক্ষার্থীরাও ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে হল ছেড়ে বাড়ি চলে যাচ্ছেন। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এমবিবিএস শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী সাঈদ আল মাহমুদ জানান, মেডিক্যালের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে বাড়ি চলে যাচ্ছেন। কেউ কেউ হলে থাকলেও দু’য়েক দিনের মধ্যে বাড়ি চলে যাবেন।

বুয়েটের মেক্যানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মাস্টার্সের এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বুয়েটের বেশির ভাগ শিক্ষার্থী ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ইতোমধ্যে বাড়ি চলে গেছেন। হলগুলো ফাঁকা পড়ে আছে। এ বিষয়ে আজ বুয়েট প্রশাসন মিটিংয়ে বসতে পারেন।