পুনরায় ব্যবহারযোগ্য মাস্ক উৎপাদন করছে ব্র্যাক

ব্র্যাকনভেল করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক স্বাস্থ্যসম্মত প্রক্রিয়ায় দুই লাখের বেশি ‘পুনরায় ব্যবহারযোগ্য মাস্ক’ উৎপাদন শুরু করেছে। এছাড়া, সংস্থাটি ইতোমধ্যে পার্সোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) বা সুরক্ষা পোশাক তৈরির বিষয়টিও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে। মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে ব্র্যাক।

ব্র্যাক জানায়, পিপিই’র উৎপাদন খুব শিগগিরই শুরু করা সম্ভব হবে। দেশে উৎপাদিত এই সুরক্ষা পোশাক চিকিৎসকসহ দেশের বিভিন্ন পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী ও অন্যান্য জরুরি সেবা প্রদানকারীদের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হবে।

এ প্রসঙ্গে ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ্ বলেন, ‘কোভিড-১৯-এর ঝুঁকি মোকাবিলায় ব্র্যাক অতি দ্রুত তার সামর্থ্য বাড়ানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে। লাখ লাখ মানুষের কাছে স্বাস্থ্যবার্তা পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে মাস্ক তৈরি করতে শুরু করেছি আমরা। এখন আমরা দেশেই পিপিই বা সুরক্ষা পোশাক তৈরির বিষয়টি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছি।’

তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯ সংক্রমণের বিপুল বিস্তারের ফলে শিল্পোন্নত দেশগুলোতেও সুরক্ষা পোশাকের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ফলে তা আমদানি করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। আমরা আশা করছি, পরীক্ষা-নিরীক্ষায় সফল হয়ে অচিরেই আমরা এর উৎপাদনে যেতে পারবো। এতে বিজিএমইএ-সহ সংশ্লিষ্টরা এগিয়ে আসবেন এবং বাংলাদেশ সরকারের তত্ত্বাবধানে এর উৎপাদন ও বিতরণ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।’

ব্র্যাক জানায়, ইতোমধ্যে ব্র্যাকের ৫০ হাজারেরও বেশি মাঠপর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মী দেশের ৬১ জেলায় তৃণমূল মানুষের কাছে কোভিড-১৯ সংক্রমণ মোকাবিলার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবার্তা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা উপকরণ পৌঁছে দেওয়ার কাজ করে যাচ্ছেন। এর পাশাপাশি, ব্র্যাক তার ঋণ কর্মসূচির কিস্তি জমাদান ২৪ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত স্থগিত রেখেছে এবং সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করে যাচ্ছে। কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যেও সংক্রমণ মোকাবিলায় স্বাস্থ্যবার্তা ও সাবানসহ অন্যান্য উপকরণ বিতরণ করা হচ্ছে।

কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের ওপর জোর দিয়েছে ব্র্যাক বলে জানান সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ্। তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া এই সংক্রমণ মোকাবিলায় আরও বেশি যৌথ উদ্যোগ গ্রহণের কোনও বিকল্প নেই। সুখের কথা, আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশ সরকার, দাতা সংস্থা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও উন্নয়ন সংস্থাগুলো ক্রমশ এগিয়ে আসছে এবং সমন্বিত উদ্যোগ নিচ্ছে। আমরা ভবিষ্যতে এ ধরনের আরও যৌথ উদ্যোগ গ্রহণের চেষ্টা করে যাবো এবং অন্যদেরও এক্ষেত্রে অনুপ্রাণিত করবো।’ একইসঙ্গে তিনি সংক্রমণ মোকাবিলায় সাধারণ জনগণকে গণপরিবহনে ভ্রমণ পরিহার ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ সরকারের সতর্কতামূলক বার্তা মেনে চলার জন্যও আহ্বান জানান।