বিদেশে করোনায় মৃত বাংলাদেশিদের জন্য রাষ্ট্রীয় শোকের প্রস্তাব রামরুর

রামরুর চেয়ার অধ্যাপক ড. তাসনিম সিদ্দিকীকরোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মৃত্যুবরণ করা বাংলাদেশিদের জন্য রাষ্ট্রীয় শোক প্রস্তাব ও ঋণ তহবিল গঠনের দাবি জানিয়েছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্ট রিসার্চ ইউনিট (রামরু)। শনিবার (৪ এপ্রিল) বিকালে এক অনলাইন ব্রিফিংয়ে এ দাবি জানান রামরুর চেয়ার অধ্যাপক ড. তাসনিম সিদ্দিকী।
রামরুর পক্ষ থেকে প্রতিবেদন তুলে ধরে তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, অভিবাসীরা আশা করছেন করোনাভাইরাসে যারা মারা গেছেন তাদের অবদান তুলে ধরে বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে শোক প্রকাশ করবে। দেশে এবং বিদেশে যারা করোনায় মারা গেছেন তাদের জন্য আগামী  ১২ এপ্রিল দেশে এবং বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা সকাল ৯টায় (যার যার সময়) ১ মিনিট নীরবতা পালন করার প্রস্তাবও দিয়েছে রামরু।
এছাড়া, দেশের অভ্যন্তরে রফতানিমুখী শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিকদের মজুরি দেওয়ার  জন্য সরকারের ৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন প্রশংসনীয় বলেও দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। একইসঙ্গে বিদেশে কর্মহীন অভিবাসীদের পরিবারের জন্য বিনা সুদে ঋণ ও ক্ষেত্র বিশেষে অনুদানের জন্য তহবিল গঠনের দাবি জানায় রামরু।

ড. তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, করোনা সংক্রমণের উৎস হিসেবে মূলত অভিবাসীদেরকেই চিহ্নিত করা হচ্ছে। অন্যান্য জনগোষ্ঠী  যেমন ব্যবসায়ী, পর্যটক, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরত যাত্রীদের ব্যাপারটি বিষয়টি তেমন গুরুত্ব পায়নি। অনেক ক্ষেত্রে তারাও কোয়ারেন্টিনে আসেননি কিন্তু তা নিয়ে তেমন তোলপাড় হয়নি।

রেমিট্যান্স পরিস্থিতি তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের তুলনায় এ বছরের প্রথম ৩ মাসে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছে ১২ শতাংশ। সামনে তা আরও কমবে। রেমিট্যান্স প্রবাহে নিম্নগতি জাতীয় অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলার পাশাপাশি রেমিট্যান্স নির্ভর পরিবারগুলোতে দেখা দেবে ক্রান্তিকালীন দারিদ্র। এসব পরিবারের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস স্থানীয় বাজারের ওপর প্রভাব ফেলবে।

তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, দীর্ঘমেয়াদে করোনা ভাইরাসের সব ফলাফলই কিন্তু নেতিবাচক হবেনা। করোনা ভাইরাসের কারণে পরবর্তীতে কিছু নতুন কাজেরও সুযোগ সৃষ্টি হবে। জার্মানি মেডিক্যাল স্টাফ এর স্বল্পতা মেটাতে অভিবাসী ও শরণার্থীদের ব্যবহার করছে। আমেরিকা, জাপান, কানাডা, এবং অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলো তাদের মেডিক্যাল সামগ্রী, ডাক্তার, নার্স, মাইক্রোবায়োলজিস্ট, বায়োকমিস্ট এবং ল্যাব টেকনেশিয়ানের ঘাটতির কথা উল্লেখ করছে। এসব ক্ষেত্রে প্রচুর অর্থ বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে যা ভবিষ্যতে অভিবাসনের সুযোগ তৈরি করবে।

রামরুর অন্যান্য সুপারিশের মধ্যে আছে, অভিবাসনের দেশে সুরক্ষা, অভিবাসীদের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রাখা, বায়রা এবং রিক্রুটিং এজেন্সির ভূমিকা রাখা, ফেরত আসা অভিবাসীর ম্যাপিং ও রিটার্নি ডাটাবেজ তৈরি করা,রেমিট্যান্সের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে রেমিট্যান্স প্রক্রিয়াকরণ ব্যবস্থা সচল রাখা, সরকারি বিনিয়োগ, বিদেশ প্রত্যাগত অভিবাসীদের অভিজ্ঞতা ব্যবহার করা।