নতুন সাজে গুলিস্তান পার্ক

রাজধানীর গুলিস্তানে শহীদ মতিউর পার্ক ঢেলে সাজানো হয়েছে। সংস্কারের ফলে নবরূপ পেয়েছে একসময়ের অবহেলিত মাঠটি।

গুলিস্তানে শহীদ মতিউর পার্কচারদিকের দেয়াল সরিয়ে দিয়েছেন বিশিষ্ট স্থপতি রফিক আজম। এখন যেকোনও দিক দিয়ে পার্কে প্রবেশ করা যায়। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘যখনই কোনো উদ্যান বা পার্ক দেয়াল দিয়ে ঘেরাও করা হয় তখন ভেতরে অপরাধ দানা বাঁধে। উন্মুক্ত থাকলে সবকিছু নজরদারিতে থাকে। এজন্য পার্কটির চারদিক উন্মুক্ত রেখে এর সংস্কার করা হয়েছে। চারদিক দিয়ে মাঠে মানুষ প্রবেশ করতে পারবে।’

গুলিস্তান শহীদ মতিউর পার্কসরেজমিন দেখা গেছে, ভেতরের ফুটপাত আগের চেয়ে চওড়া। চারদিকে বাগানবিলাস ও গাধাসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফুল গাছ।
গুলিস্তানে শহীদ মতিউর পার্কএছাড়া আছে ঝাউ, মেহগনি, পাতাবাহার, একাশিয়া, ইউক্যালিপটাস গাছ। আম, জামসহ বিভিন্ন ফল গাছও দেখা যায়। গাছপালা ও বারমুডা প্রজাতির ঘাস পরিচর্যায় দিনে তিন-চারবার পানি ছিটানো হয়।

গুলিস্তানে শহীদ মতিউর পার্কপার্কের পুকুরের দৃশ্য উপভোগের জন্য তৈরি হয়েছে বসার একটি মাচা। চারদিকের পাড় বাঁধাই করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। ভাসমান মানুষের গোসলের জন্য রয়েছে একটি ঘাট। পার্কে বিভিন্ন রঙের বাতিও যুক্ত করায় সৌন্দর্য বেড়েছে।

গুলিস্তানে শহীদ মতিউর পার্কে জিমনেসিয়ামপূর্ব পাশে বঙ্গভবন সংলগ্ন এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে দোতলা জিমনেসিয়াম। ব্যায়াম করার জন্য সব ধরনের সরঞ্জাম পাবেন আগ্রহীরা। ভবনটির ভেতর থেকে দুই দিকের দৃশ্য উপভোগ করা যায়। ইতোমধ্যে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে পার্কটি।

গুলিস্তানে শহীদ মতিউর পার্কডিএসসিসি মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকনের ‘জল-সবুজে ঢাকা’ প্রকল্পের মাধ্যমে পার্কটির আধুনিকায়ন হয়েছে। তার কথায়, ‘গুলিস্তানের এই পার্কটি মাদকসেবীদের আখড়া ছিল বলা চলে। অসামাজিক কার্যকলাপের কারণে মানুষ হাঁটতে পারতো না। আমরা পার্কটি আধুনিকায়নের উদ্যোগ নিই। পার্কের মধ্যে একটি বিশ্বমানের জিমনেসিয়াম তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। যাতে পার্কে হাঁটতে এসে মানুষ ব্যায়াম করতে পারে।’

গুলিস্তানে শহীদ মতিউর পার্কমাঠ সংস্কারে খরচ গেছে ৫ কোটি ৬৪ লাখ ২৪ হাজার টাকা। ডিএসসিসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পার্কের ভেতরে একটি ব্যাংকের বুথ স্থাপন করা হবে। মাদকাসক্তদের আসরসহ অসামাজিক কার্যকলাপ ঠেকানোর দায়িত্বে আছে আনসার বাহিনী।

গুলিস্তান শহীদ মতিউর পার্কগুলিস্তান পার্ক ডিএসসিসির নিজস্ব সম্পত্তি। মাঠটির মোট আয়তন ৩ দশমিক ৫ একর। ১৯৯৭ সালে ৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে পার্কে নির্মাণ করা হয় ‘মহানগর নাট্যমঞ্চ’। এটি ভাড়া দিয়ে রাজস্ব পাচ্ছে ডিএসসিসি।