রেমডেসিভির উৎপাদনের দাবি এসকেএফের; এখনও স্যাম্পল জমা দেয়নি: ওষুধ প্রশাসন

রেমডেসিভির
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কার্যকর ওষুধ রেমডেসিভির উৎপাদন ধাপ শেষ করেছে বলে দাবি করেছে দেশীয় প্রতিষ্ঠান এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক (মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস) ড. মুজাহিদুল ইসলাম দাবি করেন, শুক্রবার সকালে দেশে প্রথমবারের মতো করোনা চিকিৎসায় কার্যকর জেনেরিক রেমডেসিভির উৎপাদন কাজ শেষ হয়েছে। আমরা ওষুধটি ‘রেমিভির’ নামে বাজারজাত করবো। তবে এরআগে আরও কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতে হবে। 

তিনি আরও বলেন, রবিবার (১০ মে) ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরে স্যাম্পল জমা দেওয়া হবে। তাদের সব প্রক্রিয়া ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর রেমডেসিভির বাজারে আসবে।

তবে এ ওষুধের ডিস্ট্রিবিউশন সাধারণ ওষুধের মতো হবে না। কেবলমাত্র কিছু হাসপাতাল এবং ইনস্টিটিউশনে এই ওষুধ সরবরাহ করা হবে। কোনও খুচরা ওষুধের দোকানে এই রেমডেসিভির পাওয়া যাবে না বলে জানান ড. মুজাহিদ।

এ বিষয়ে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের পরিচালক রুহুল আমিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালসের উৎপাদন কাজ শেষ পর্যায়ে। এখনও কিছু টেস্ট বাকি আছে মনে হয়। সব পরীক্ষা শেষে তারপরই এটা ‘ফিনিশড প্রোডাক্ট’ হিসেবে রেডি হবে বাজারজাতের জন্য। কিছু পরীক্ষা কোম্পানি নিজেই করবে, আর তারপর তারা আমাদের কাছে স্যাম্পল দিলে আমরা তার কাউন্টার টেস্ট করবো।

রবিবার ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরে স্যাম্পল দেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, কেমিক্যাল অ্যানালাইসিস করতে বেশি সময় দরকার হয় না, কিন্তু যদি স্টেরিলিটি টেস্ট করতে হয়, তাহলে এর জন্য ১৪ দিন সময় লাগবে বলে জানান তিনি।

এদিকে, এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সিমিন হোসেন বলেন, ‘বিশ্বে করোনার একমাত্র কার্যকর ওষুধ বলে স্বীকৃত জেনেরিক রেমডেসিভির উৎপাদনের সব ধাপ আমরা সম্পন্ন করেছি।’

ওষুধ প্রশাসন অদিফতর গত মার্চ মাসে ওষুধটি ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার পর প্রতিষ্ঠানের ফর্মুলেশন বিজ্ঞানীরা মার্চ মাসের মাঝামাঝি থেকে রেমডেসিভির নিয়ে কাজ শুরু করেন জানিয়ে সিমিন হোসেন বলেন, ‘যেহেতু এটি একটি শিরায় দেওয়া ইনজেকশন, সে কারণে এর উৎপাদনে সূক্ষ্ম প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। দুই মাস ধরে এসকেএফ কর্মীদের নিরলস পরিশ্রমের ফলেই এত কম সময়ে এটা উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে।’

ওষুধের মূল উপাদান সরবরাহকারীদের সঙ্গে চুক্তি করে পর্যাপ্ত কাঁচামাল প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

ইতোমধ্যে এসকেএফসহ দেশের ছয়টি ওষুধ কোম্পানিকে করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ এর জন্য রেমডেসিভির উৎপাদনের অনুমতি দিয়েছে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর। করোনাভাইরাসের জন্য এ ওষুধ কার্যকর বলে ইতোমধ্যে জানিয়েছে আমেরিকার দ্য ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)।

ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের পরিচালক রুহুল আমিন আরও জানান, রেমডেসিভির অ্যান্টি ভাইরাল ওষুধ। একসময় ইবোলাতে ব্যবহার হতো। এখন ‘ইমার্জেন্সি অথোরাইজেশন’ দিয়েছে আমেরিকার দ্য ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)।

রেমডেসিভির উৎপাদনের অনুমতি পাওয়া দেশের অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো হলো বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালস, হেলথ কেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস এবং স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস।