প্রজ্ঞা’র কো অর্ডিনেটর হাসান শাহরিয়ার স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বছরের পর বছর ধরে তামাক এবং অন্যান্য নিকোটিন পণ্যে শিশু-কিশোর এবং তরুণদের আকৃষ্ট করতে অত্যন্ত কৌশলী এবং আগ্রাসী প্রচারণা চালিয়ে আসছে তামাক কোম্পানিগুলো।
এতে বলা হয়, তামাকের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে ৮০ লাখ মানুষ প্রাণ হারায়। এর মধ্যে শুধু বাংলাদেশেই বছরে ১ লক্ষ ২৬ হাজার মানুষ মারা যায় তামাক ব্যবহারজনিত রোগে। তামাক কোম্পানির কাছে এই মৃত্যুর অর্থ তাদের ভোক্তা হারানো এবং শূন্যতা পূরণে তারা টার্গেট করে শিশু-কিশোর ও তরুণদের। তামাক এবং নিকোটিনযুক্ত পণ্যে আকৃষ্ট করতে ইচ্ছাকৃতভাবে নানা কারসাজির আশ্রয় নেয় কোম্পানিগুলো। বিশেষ করে শিশু-কিশোরদের লক্ষ্য করে উদ্ভাবনী বিজ্ঞাপন এবং আকর্ষণীয় ডিজাইনে নিত্যনতুন পণ্য বাজারজাতকরণ, সুগন্ধিযুক্ত তামাকপণ্য তৈরি, চলচ্চিত্র-টিভি-অনলাইন স্ট্রিমিং প্রোগ্রামগুলোতে তামাকের চিত্রায়ন মিডিয়া, সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের ব্যবহার, অনুষ্ঠানের ব্যয়ভার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশেপাশে তামাকপণ্য সহজলভ্য করাসহ নানা কৌশল অবলম্বন করে তারা। তরুণদের নিজস্ব ব্র্যান্ডের প্রতি আকৃষ্ট করতে পৃথিবীব্যাপী বছরে ৯০০ কোটি ডলার ব্যয় করে তামাক কোম্পানিগুলো।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ইউএস সার্জন জেনারেল রিপোর্ট ২০১৪ অনুযায়ী প্রায় ৯০ শতাংশ সিগারেট ধূমপায়ী ১৮ বছর বয়সের মধ্যে প্রথমবার ধূমপান করে। অল্প বয়সে তামাকপণ্যে আসক্ত হয়ে পড়লে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা কমতে থাকে এবং বয়স বাড়ার সঙ্গে ফুসফুসের স্বাভাবিক বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়। ফুসফুস ক্যান্সার, হৃদরোগ, অকাল বার্ধক্য, মানসিক অস্থিতিশীলতাসহ নানাবিধ রোগ সৃষ্টি হয় তামাকের কারণে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, যারা কিশোর বয়সে ধূমপানে আসক্ত হয়, তাদের অ্যালকোহলে আসক্ত হয়ে পড়ার সম্ভাবনা স্বাভাবিকের তুলনায় তিন গুণ বেশি, গাঁজায় আট গুণ এবং কোকেইনের ক্ষেত্রে ২২ গুণ বেশি। অর্থাৎ তামাক ও নিকোটিন কেবল একটি আসক্তিই নয়, এটি তরুণদের আরও অনেক বিধ্বংসী আসক্তির পথে পরিচালিত করে।
এবিষয়ে তামাকবিরোধী সংগঠন প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের বলেন, বাংলাদেশে বর্তমান মোট জনগোষ্ঠীর ৪৯ শতাংশই তরুণ। তামাক কোম্পানির মূল টার্গেট কিভাবে এই বিশাল তরুণ সমাজকে তামাকে আসক্ত করে ব্যবসা বাড়ানো। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রের করণীয় হবে তামাক কোম্পানির ছোবল থেকে তরুণদের সুরক্ষা প্রদান করা।