১০০ বছর আগের স্প্যানিশ ফ্লু'র ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না হয়

এম.এম. ইমরুল কায়েস সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সাধারণ ছুটি আর বাড়ছে না। গণপরিবহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাচ্ছে। তবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে সবাইকে আগের মতোই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহকারী প্রেস সচিব এম. এম. ইমরুল কায়েস। প্রয়োজন ছাড়া কাউকে বাইরে না বের হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। শনিবার (৩০ মে) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এসব জানিয়ে একটি পোস্ট দিয়েছেন সরকারি এই কর্মকর্তা।



প্রধানমন্ত্রী সহকারী প্রেস সচিব বলেন, ‘দেশের অর্থনীতির স্বার্থে কেবল দাফতরিক কার্যক্রমের ক্ষেত্রে নিয়ম-নীতি কিছুটা শিথিল করা হয়েছে। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে করোনোভাইরাস সংক্রান্ত স্বাস্থ্যবিধি আগের মতোই কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে সবাইকে। কোনও অবস্থাতেই অবহেলার সুযোগ নেই। মনে রাখা প্রয়োজন, আমার বা আপনার মৃত্যু অন্যের জন্য একটি সংখ্যা মাত্র, কিন্তু নিজের পরিবারের কাছে তা পুরো পৃথিবীর চেয়েও বেশি।’

ইমরুল কায়েস উল্লেখ করেন, স্প্যানিশ ফ্লু’র ইতিহাস। মানব ইতিহাসের সবচেয়ে মারাত্মক সেই মহামারি ১৯১৮ থেকে ১৯২০ সাল পর্যন্ত তিন ধাপে সংক্রমণ করেছিল। এতে সারাবিশ্বে ৫০ কোটির মতো আক্রান্ত হয়েছিল। এর মধ্যে মৃত্যুবরণ করে ৫ কোটিরও বেশি মানুষ। ওই মহামারিতে বেশিরভাগ প্রাণহানির ঘটনা ঘটে দ্বিতীয় ধাপে। তখন পৃথকীকরণ ও সামাজিক দূরত্ব ব্যবস্থায় লোকজন এতই অধৈর্য ও খারাপ লাগছিল যে, প্রথম লকডাউন তুলে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সবাই রাস্তায় নেমে সবকিছু তুচ্ছ করে আনন্দ-উল্লাসে মেতে ওঠে। দ্বিতীয় ধাপের পরবর্তী সপ্তাহগুলোতে তারা মারাত্মকভাবে সংক্রমিত হয় এবং ফলশ্রুতিতে কয়েক কোটি লোক মারা যায়।

ইমরুল কায়েসের কথায়, ‘আসুন, আমাদের সময়ে আমরা ১০০ বছর আগের স্প্যানিশ ফ্লু'র ঘটনাকে অনুসরণ না করি। ইতিহাস নিজের পুনরাবৃত্তি ঘটনায়- এই প্রবাদ বাক্যকে সম্মিলিতভাবে আমরা অন্তত এক্ষেত্রে ভুল প্রমাণিত করি।’

ফেসবুক পোস্টে প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বিশ্বব্যাপী মহামারি আকার ধারণ করেছে। ইতালি, স্পেন, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, আমেরিকাসহ বিশ্বের উন্নত দেশগুলো কোভিড-১৯ মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে। তার দাবি, ‘সরকারের সময়োচিত ও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে এখনও বাংলাদেশে এই রোগের ব্যাপক সংক্রমণ ঘটেনি এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’

দেশে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ৪৩ হাজার মানুষ। আর মারা গেছে ৬০০ জনের মতো। গত দুই মাসের বেশি সময় ধরে জনস্বার্থে অফিস, আদালত, কলকারখানা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারি আদেশে বন্ধ রয়েছে। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় এবং কিছু ক্ষেত্র বাদে আগামীকাল (৩১ মে) থেকে সীমিত আকারে শর্তসাপেক্ষে চালু হচ্ছে সার্বিক কর্মকাণ্ড।