আবরার ফাহাদ হত্যা মামলা: ভার্চুয়াল আদালতে চার আসামির জামিন নামঞ্জুর

আবরার ফাহাদ

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় চার জনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। রবিবার (৭ জুন) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর (ভার্চুয়াল) বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।

জামিন নামঞ্জুর হওয়া আসামিরা হলো, বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহতামিম ফুয়াদ, মোর্শেদ অর্মত্য ইসলাম ও এস এম মাহমুদ সেতু। আদালতের সংশ্লিষ্ট সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আসামিদের পক্ষে ফারুক আহমেদসহ কয়েকজন আইনজীবী জামিন শুনানি করেছেন। এ সময় জামিনের বিরোধিতা করে রাষ্ট্রপক্ষ। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক জামিন আবেদন নামঞ্জুরের আদেশ দেন।

গত ২ জুন আসামি মো. মেফতাহুল ইসলাম জিওনের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন একই আদালত।

এদিকে হত্যা মামলাটি (একই ট্রাইব্যুনালে) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এ বিচারাধীন রয়েছে। মামলাটির অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য রয়েছে।

গত ১৩ নভেম্বর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ওয়াহিদুজ্জামান ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। ২৫ জনের মধ্যে এজাহারভুক্ত ১৯ জন এবং এর বাইরে তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আরও ৬ জনের জড়িত থাকার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয় এতে। এজাহারভুক্ত ১৯ জনের মধ্যে ১৭ জন এবং এজাহারের বাইরে থাকা ৬ জনের মধ্যে ৫ জনসহ মোট ২২ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পলাতক আছে তিন জন। অভিযোগপত্রে ৬০ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে এবং ২১টি আলামত ও ৮টি জব্দ তালিকা আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে।

এজাহারে থাকা আসামিরা হলো মেহেদী হাসান রাসেল, অনিক সরকার, ইফতি মোশাররফ সকাল, মেহেদী হাসান রবিন, মেফতাহুল ইসলাম জিওন, মুনতাসির আলম জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির, মুজাহিদুর রহমান, মুহতাসিম ফুয়াদ, মনিরুজ্জামান মনির, আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুল ইসলাম, শামীম বিল্লাহ, মোয়াজ আবু হুরায়রা, এএসএম নাজমুস সাদাত, মোর্শেদুজ্জামান জিসান ও এহতেশামুল রাব্বি তানিম।

এজাহারবহির্ভূত ৬ জন হলো ইশতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, অমিত সাহা, মিজানুর রহমান ওরফে মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত, এস এম মাহমুদ সেতু ও মোস্তবা রাফিদ।

পলাতক তিন আসামির নাম মোর্শেদুজ্জামান জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মোস্তবা রাফিদ। তাদের মধ্যে জিসান ও তানিম এজাহারভুক্ত আসামি।

আবরার বুয়েটের ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন। গত ৬ অক্টোবর রাতে তাকে ২০১১ নম্বর কক্ষে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। পরে রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের সিঁড়ি থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
গত বছরের ৭ অক্টোবর রাজধানীর চকবাজার থানায় আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। পুলিশ পরে ২২ জনকে গ্রেফতার করে। এরমধ্যে আট জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তাদের সবাই বুয়েট ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।