অনলাইন শিক্ষা: শুধু ক্লাস নয়, থাকতে হবে পরীক্ষা ও মূল্যায়ন

11

করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশে শিক্ষার পরিবেশ বদলে গেছে। পরিবর্তিত এই পরিস্থিতিতে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের কোনও বিকল্প নেই। আর  করোনার পরও এই ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে। তবে শুধু শ্রেণি কার্যক্রমই (ক্লাস) নয়, পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়ন ও পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকতে হবে অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থায়।

রবিবার (২৮ জুন) রাতে ‘আগামীর বাংলাদেশ’ নামে একটি সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত ‘করোনাকালীন এবং পরবর্তী শিক্ষা ব্যবস্থা বিষয়ে করণীয়’ শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেছেন দেশের শিক্ষাবিদসহ সংশ্লিষ্টরা। 

অনুষ্ঠানে সাবেক শিক্ষা সচিব নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অনলাইন শিক্ষার কোনও বিকল্প নেই। অনলাইন শিক্ষার এই ব্যবস্থায় সবাইকে শ্রেণি কার্যক্রম, পরীক্ষা ও মূল্যায়নে যেতে হবে।’ 

তিনি আরও  বলেন, ‘আইসিটি শুধু প্রশিক্ষণের বিষয় না, এটা ব্যবহারের বিষয়ও বটে। এ জন্য দরকার আগ্রহ ও সাহস।’

অনুষ্ঠানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে. চৌধুরী বলেন, ‘করোনার সময় নয় পরেও অনলাইন শিক্ষার প্রয়োজন রয়েছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত বই ও পরীক্ষার বোঝা কমিয়ে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। পরীক্ষা পদ্ধতির সংস্কার এবং ধারাবাহিক মূল্যায়নের ব্যবস্থা নিতে হবে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস. এম শামীম রেজা বলেন, ‘অনলাইন শিক্ষায় যদি পরীক্ষা ও মূল্যায়ন না থাকে, তাহলে শুধু ক্লাস নেওয়ার কোনও মানে নেই। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শুধু ক্লাস নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু পরীক্ষা নেওয়া যাবে না কেন? পরীক্ষা ও মূল্যায়ন না থাকলে শিক্ষার্থীরা কেন ভার্চয়াল ক্লাসে অংশ নেবেন।’

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদ বলেন, ‘বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মতো দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকদের ওপর ক্লাসের বোঝা কমিয়ে আরও গবেষণাধর্মী পলিসি বাস্তবায়ন করা দরকার। পুথিগত বিদ্যার ওপর গুরুত্ব না দিয়ে বাস্তবভিত্তিক শিক্ষায় গুরুত্ব দেওয়া উচিত। শিক্ষাকে জীবনমুখী করতে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ভোকেশনাল শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে।  পাশাপাশি এইচএসসি’র পর কোন ধরনের শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষায় যাবেন এবং কারা গবেষণায় যাবেন, সে বিষয়ে সমন্বিত পরিকল্পনার প্রয়োজন।’

আলোচনায় আরও যুক্ত— শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক আবু জাফর আহমেদ মুকুল এবং বাংলাদেশ এডুকেশন রিপোর্টার্স ফোরামের (বিইআরএফ)  সাধারণ সম্পাদক এস এম আববাস প্রমুখ।