সালাম ঢালীর ঘটনা যেন জাহালমের পুনরাবৃত্তি: মানবাধিকার কমিশন

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনসাজাপ্রাপ্ত হয়ে পলাতক থাকা এক আসামির সঙ্গে নামের কিছুটা মিল থাকায় কারাভোগ করছেন খুলনার সালাম ঢালী। এটাকে টাঙ্গাইলের জাহালমের ঘটনার পুনরাবৃত্তি বলে অভিযোগ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। একইসঙ্গে বিনা অপরাধে সালাম ঢালীর জেল খাটার ঘটনাকে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন উল্লেখ করে দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি দাবি করেছে কমিশন।

মঙ্গলবার (৭ জুলাই) কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা ফারহানা সাঈদের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ অভিযোগ করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আসামির নাম, বাবার নাম এবং ঠিকানার একাংশের মিল থাকায় বিনা অপরাধে জেলে থাকা সালাম ঢালীকে আইনি সহায়তা দিয়ে মুক্তির ব্যবস্থা করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। গণমাধ্যমে ‘আসামি না হয়েও জেল খাটছেন খুলনার সালাম ঢালী’ শীর্ষক সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বাগেরহাটের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তার মুক্তির জন্য আবেদন করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (৬ জুলাই) আদালত সালাম ঢালীকে মুক্তির আদেশ দেন।

কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম বলেন, ‘একের পর এক এ ধরনের ঘটনা ঘটছে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই না করে নিরপরাধ ব্যক্তিকে আটক রোধে যথোপযুক্ত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা আবশ্যক বলে মনে করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। একইসঙ্গে ওই ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করা এবং সংশ্লিষ্ট সব দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সতর্ক করার জন্য সরকারের কাছে চিঠি পাঠানো হচ্ছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের গত ১১ মার্চ রাত ১২টায় খুলনার সোনাডাঙ্গা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সঞ্জিত কুমার মণ্ডল সদর থানা এলাকার ৬০/১৮, শেরেবাংলা রোডের বাসিন্দা সালাম ঢালীকে গ্রেফতার করেন। মো. সালাম ঢালীর পিতার নাম মফিজ উদ্দিন ঢালী। প্রায় চার মাস ধরে নিরপরাধ মুদি দোকানি সালাম ঢালী বাগেরহাট কারাগারে সাজা ভোগ করছেন। অন্যদিকে প্রকৃত অপরাধী মো. আব্দুস সালাম খুলনার সোনাডাঙ্গা থানাধীন শেখপাড়া মেইন রোডের মৃত শফিজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি পলাতক রয়েছেন।’

এ ঘটনায় মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রসহ ব্যক্তিগতভাবে হাইকোর্টে দুটি রিট দায়ের করা হয়। তবে সেসব রিট শুনানির আগেই বাগেরহাটের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত সালাম ঢালীকে মুক্তির আদেশ দেন। পরে সালাম ঢালী কারামুক্ত হন।