রবিবার (১৯ জুলাই) সরেজমিনে দেখা গেছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (সাবেক নাসিরাবাদ ইউনিয়ন) ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডের বেশিরভাগ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। ওয়ার্ডের ইদারকান্দি, ফকিরখালী, বালুর পাড়, বাবুর জায়গা, দাসেরকান্দি, জোড়ভিটা, ত্রিমোহনী উত্তরপাড়া, নাসিরাবাদ উত্তরপাড়া, নাসিরাবাদ টেকপাড়া, ইমামবাগের কিছু অংশ, উত্তরগাঁও, শেখের জায়গা ও নাগদারপাড়সহ বিভিন্ন এলাকায় এক থেকে দেড় হাত পানি বেড়েছে। এসব এলাকায় বসবাসরত মানুষের বাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। এলাকার মানুষ এখন নৌকা কিংবা পানির ভেতর দিয়ে যাতায়াত করছেন।
স্থানীয় কাউন্সিলর মো. আকবর হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এই এলাকার অনেক বাড়িঘর তলিয়ে গেছে। রাস্তাঘাটে পানি উঠেছে। গত এক সপ্তাহ ধরে নিচু এলাকাগুলোতে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে এক থেকে দেড় ফুট পর্যন্ত পানি বেড়েছে। এলাকার মানুষ খুবই কষ্টে আছেন। কাজকর্ম কমে গেছে। বিভিন্ন এলাকায় নৌকা দিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে। এভাবে আর দুয়েক দিন গেলে মানুষের ঘরে ঘরে পানি ঢুকে পড়বে। তখন মাচা বানিয়ে থাকতে হবে। অনেকেই এখন সেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন।’
তিনি জানান, তিস্তার পানির একটা অংশ ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকা হয়ে এদিকে চলে আসে। সেই পানির অর্ধেক অংশ ভৈরব আর অর্ধেক শীতলক্ষ্যা, তুরাগ ও বালু নদীর অববাহিকায় চলে আসে। বর্তমানে বালু নদীতে পানি বেড়েছে। তাই এর আশপাশের এলাকাগুলো তলিয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্যমতে, বর্তমানে বালু নদীতে পানির স্তর হচ্ছে ৭ দশমিক ১৩ মিটার। এই নদীর পানির সমতল ৫ দশমিক ৩৩ মিটার। ৫ দশমিক ৭৫ মিটারের ওপরে গেলে বিপৎসীমা ধরা হয়ে থাকে। সে কারণেই এই নদীতে কেন্দ্রের সতর্ক অবস্থা জারি রয়েছে।
নাসিরাবাদ টেকপাড়ার বাসিন্দা আবুল হোসেন বলেন, ‘নদীতে পানি বেড়েছে। পুরো গ্রামে পানি বাড়ছে। আর এক-দুই দিন গেলে বাসায় পানি ঢুকে যাবে। তখন হয়তো অন্য কোনও জায়গায় গিয়ে আশ্রয় নিতে হবে।’
ফকিরখালীর বাসিন্দা হাজী আবদুল আউয়াল বলেন, ‘উত্তরাঞ্চলে বন্যা দেখা দিলেই আমাদের এলাকায় পানি চলে আসে। এটি অনেক পুরনো সমস্যা। কিন্তু এ সমস্যার সমাধানে কেউ কোনও উদ্যোগ নেয়নি। এখন পর্যন্ত আমরা কোনও সাহায্য-সহযোগিতাও পাইনি। সিটি করপোরেশন থেকেও কেউ কোনও খোঁজ নিচ্ছে না।’
ছবি: শাহেদ শফিক।