জানা গেছে, করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকার পর ১৬ জুন থেকে সীমিত পরিসরে আন্তর্জাতিক রুটে বিমান চলাচল শুরু হয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে কাতারে বাংলাদেশিদের প্রবেশের অনুমতি না থাকায় কাতারের ট্রানজিট হয়ে ইউরোপ আমেরিকার বিভিন্ন গন্তব্যে ফ্লাইট চালানোর অনুমতি পায় কাতার এয়ারওয়েজ।
গত ২৪ জুন কাতার এয়ারওয়েজের অ্যারোনটিক্যাল অ্যান্ড করপোরেট অ্যাফেয়ার্স বিভাগের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্টকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে বেবিচকের সদস্য (ফ্লাইট স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড রেগুলেশন্স) গ্রুপ ক্যাপ্টেন চৌধুরী মো. জিয়াউল কবীরের স্বাক্ষরিত চিঠি পাঠানো হয়। চিঠিতে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে বিমানবন্দরে যাত্রীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা চলছে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশে সীমিত পরিসরে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচলের অনুমতি দিয়েছে। আন্তর্জাতিক ফ্লাইট সীমিত পরিসরে চালুর প্রক্রিয়ায় মধ্যে বেবিচক কাতার এয়ারওয়েজকে সপ্তাহে ৩টি ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দেয়। কিন্তু আমাদের নজরে এসেছে কাতার এয়ারওয়েজের ফ্লাইটে যাত্রীদের সামাজিক দূরত্ব, স্যানিটাইজেশন ও স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে না। উদ্বেগ প্রকাশ করে চিঠিতে বলা হয়, এটি বাংলাদেশে করোনভাইরাস সংক্রমণের আরও বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। আন্তর্জাতিক মানের এবং নির্ধারিত সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, জীবাণুমুক্তকরণ, স্যানিটাইজেশন প্রক্রিয়া যথাযথভাবে অনুসরণ করতে বলা হয় চিঠিতে।
সম্প্রতি কাতার এয়ারওয়েজের ফ্লাইটে ভ্রমণ করা যাত্রীরা জানিয়েছে, ফ্লাইটে ওঠার আগে যাত্রীদের মাস্ক, গ্লাভস ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার দেওয়া হয়। তবে ফ্লাইটে সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মানা হয় না। ১৬ জুলাই দিবাগত রাতে ঢাকা থেকে সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী সপরিবারে আমেরিকা যান কাতার এয়ারওয়েজের ফ্লাইটে। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, 'কাতার এয়ারওয়েজের স্বাস্থ্যবিধির পদক্ষেপগুলো নিয়ে বিজ্ঞাপন দেখেছিলাম। কিন্তু ফ্লাইটে ভ্রমণ করে আশাহত হয়েছি। তারা যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধিগুলো অনুসরণ করছে বলে আমার মনে হয়নি।'
২০ জুলাই কাতার এয়ারওয়েরজের একটি ফ্লাইটে ঢাকায় আসেন এক পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, 'আমি খুব অবাক হয়েছি যাত্রীদের আসন ব্যবস্থা দেখে। একজন যাত্রীর পাশে কোনও ফাঁকা না রেখে আরেক যাত্রীকে বসানো হয়েছে। পুরো উড়োজাহাজটি যাত্রীতে পূর্ণ ছিল।'
এ প্রসঙ্গে হজরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এএইচএম তৌহিদ উল-আহসান বলেন, 'করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিমানবন্দরে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়। আমাদের নিজস্ব উদ্যোগে নিয়মিত বিমানবন্দরের বিভিন্ন স্থান পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়। সীমিত পরিসরে ফ্লাইট চালু হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ফ্লাইটে পরিচালনা করতে বলা হয়েছে। এরপরও কোনও এয়ারলাইন্স যদি স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ না করে, তাদের সতর্ক করা হচ্ছে।'
এদিকে বাংলাদেশে কাতার এয়ারওয়েজের কর্মকর্তারা এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। তারা কাতারে অবস্থিত প্রধান কার্যালয়ে যোগাযোগের পরামর্শ দেন।