শ্রমের ন্যায্য মূল্য, পেশাগত মর্যাদা ও মৌলিক মানবাধিকার সুরক্ষায় ১৪ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদ। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কৃষ্ণলাল বলেন, ‘দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে বিভিন্ন সময়ে নানা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও হরিজন জনগোষ্ঠীর অধিকার নিশ্চিত করার উদ্যোগ আজও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি পায়নি। এখন সময় এসেছে রাষ্ট্রীয় সংস্কারের মাধ্যমে আমাদের অধিকারকে সুরক্ষিত ও সম্মানের স্থানে প্রতিষ্ঠা করার।’
শনিবার (২৮ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি জানান তিনি।
কৃষ্ণলাল আরও বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও হরিজন জনগোষ্ঠী অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিকভাবে বৈষম্যের শিকার। পেশা, বর্ণ এবং জন্মগত পরিচয়ের কারণে আমরা সমাজে সমান মর্যাদা পাচ্ছি না। প্রয়োজনীয় শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও চাকরির ক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে রয়েছি। একইসঙ্গে লঙ্ঘিত হচ্ছে আমাদের মৌলিক মানবাধিকার।‘
সংক্ষিপ্তভাবে বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদের উত্থাপিত ১৪ দফা দাবি হলো— হরিজন জনগোষ্ঠীর জন্য বসবাসের স্থায়ী স্বীকৃতি ও সরকারি আবাসনে শতভাগ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা; বিনা নোটিশে উচ্ছেদ বন্ধ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ; জাতীয় ও স্থানীয় উন্নয়ন কার্যক্রমে তাদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা; স্যানিটেশন শ্রমিকদের জন্য আধুনিক প্রযুক্তি ও সুরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহ; চুক্তিভিত্তিক ও আউটসোর্সিং কর্মীদের চাকরি স্থায়ীকরণ; স্বাস্থ্যসুরক্ষা স্কিম ও ঝুঁকিভাতা চালু; সময়মতো বেতন প্রদান, ভাতা ও রেশনিং সুবিধা নিশ্চিত এবং পদোন্নতির সুযোগ তৈরি; বাজেটে অগ্রাধিকার দিয়ে সামাজিক সুরক্ষার আওতায় সুবিধা বৃদ্ধি; জাত হরিজনদের জন্য ৮০ শতাংশ কোটা পূর্ণ বাস্তবায়ন; ক্লিনার ইন্সপেক্টর পদে শিক্ষিত হরিজনদের নিয়োগ; আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য প্রশিক্ষণ ও উপকরণ সরবরাহ; নারী শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা; এবং আত্মপরিচয়ের মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় বৈষম্যবিরোধী আইন পাস করা।
বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ আশা প্রকাশ করেন, সরকারের সদিচ্ছা থাকলে এই দাবিগুলোর বাস্তবায়ন সম্ভব এবং এর মাধ্যমে হরিজন জনগোষ্ঠী সমাজে সম্মানজনক অবস্থান লাভ করতে পারবে।