মশা নিধনে ডিএনসিসিতে আবারও চিরুনি অভিযান

ডিএনসিসিএডিস মশা নিয়ন্ত্রণে শনিবার (৮ আগস্ট) থেকে ১০ দিন ব্যাপী আবারও চিরুনি অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি)। এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ডেঙ্গু থেকে নগরবাসীকে সুরক্ষা দিতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ডিএনসিসি। শুক্রবার ডিএনসিসি থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ৮ আগস্ট থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত ১০ দিন ব্যাপী এ অভিযান চলবে। ত‌বে আগামী ১১ আগস্ট জন্মাষ্টমী, ১৪ আগস্ট শুক্রবার এবং ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে চিরুনি অভিযান বন্ধ থাকবে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত অভিযান চলবে।

চিরুনি অভিযান সফল করতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের স্থাপনার ভেতরে-বাইরে, আশেপাশে তিন দিনের বেশি জমা পানি থাকবে, ততদিন পর্যন্ত আমরা ডেঙ্গু থেকে সুরক্ষিত নই। নগরবাসীর প্রতি আমার আহ্বান, বাড়ি বা স্থাপনার ভেতরে-বাইরে, আশেপাশে কোথাও পানি জমে থাকলে এক্ষুনি ফেলে দিন। তিন দিনে একদিন জমা পানি ফেলে দিন। ডেঙ্গু থেকে সুরক্ষিত থাকুন, আপনার পরিবার, শহর ও রাষ্ট্রকে সুরক্ষিত রাখুন।’

ডিএনসিসি জানিয়েছে, ইতোপূর্বে পরিচালিত চিরুনি অভিযানের মতো এই অভিযান পরিচালনার উদ্দেশে প্রতিটি ওয়ার্ডকে ১০টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। আবার প্রতিটি সেক্টরকে ১০টি সাব-সেক্টরে ভাগ করা হয়। প্রতিদিন প্রতিটি ওয়ার্ডের একটি করে সেক্টরে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হবে। এভাবে আগামী ১০ দিনে সমগ্র ডিএনসিসিতে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হবে। প্রতিটি সাবসেক্টরে ডিএনসিসির চার জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও একজন মশক নিধনকর্মী, অর্থাৎ প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রতিদিন ৪০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও ১০ জন মশককর্মী কাজ করবেন। চিরুনি অভিযান চলাকালে ডিএনসিসির তিন জন কীটতত্ত্ববিদ, স্বাস্থ্য বিভাগ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তারা দিকনির্দেশনা দেবেন। এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে নয় জন কীটতত্ত্ববিদ এবং ছয় জন চিকিৎসক ডিএনসিসির সঙ্গে কাজ করবেন।

আগের মতো এই চিরুনি অভিযান চলাকালে যেসব বাড়ি বা স্থাপনায় এডিস মশার লার্ভা কিংবা এডিস মশা বংশবিস্তার উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যাবে, তার ছবি, ঠিকানা, মোবাইল ফোন নম্বরসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে একটি অ্যাপে সংরক্ষণ করা হবে। এর ফলে চিরুনি অভিযান শেষে ডিএনসিসির কোন কোন এলাকায় এডিস মশা বংশবিস্তার করে তার একটি ডাটাবেস তৈরি হবে। ডাটাবেস অনুযায়ী পরে তাদের মনিটর করা হবে। চিরুনি অভিযানের সঙ্গে সঙ্গে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসির আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে মোবাইল কোর্টও পরিচালিত হবে।

এর আগে গত ১৬ থেকে ২০ মে পরিচালিত চিরুনি অভিযানে ৯ হাজার ৪৬৩টি স্থাপনা পরিদর্শন করে ১৮৭টিতে এডিসের লার্ভা পাওয়া যায়। লার্ভা পাওয়ায় এ সময় ৪ লাখ ৫৮ হাজার ৩০০ টাকা জরিমানা করা হয়। পরে ৬ থেকে ১৪ জুন অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ধাপের চিরুনি অভিযানে ডিএনসিসির এক লাখ ৩৪ হাজার ১৩৫টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে এক হাজার ৬০১টি বাড়িতে এডিসের লার্ভা পাওয়া যায়। এডিসের লার্ভা পাওয়ায় সে সময় ২১ লাখ ৮৫ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়। সর্বশেষ ৪ থেকে ১৪ জুলাই অনুষ্ঠিত পরিচালিত চিরুনি অভিযানে এক লাখ ৩০ হাজার ৯৭৮টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ৮৯৮টিতে এডিসের লার্ভা পাওয়া যায়। সে সময় ২১ লাখ ৬৮ হাজার ৭১০ টাকা জরিমানা করা হয়।

এসব চিরুনি অভিযানের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ২ লাখ ৭৪ হাজার ৫৭৬টি বাড়ি বা স্থাপনা পরিদর্শন করে ২ হাজার ৬৮৬টিতে এডিসের লার্ভা পাওয়া যায়। এডিসের লার্ভা পাওয়ায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে এ পর্যন্ত মোট ৪৮ লাখ ১২ হাজার ৫১০ টাকা জরিমানা করা হয়।