উচ্ছেদের পর পোক্ত করে দখল

পাকা দোকান নির্মাণ করে রাস্তা দখলগুলিস্তানের বঙ্গবন্ধু এভিনিউ রেলওয়ে সুপার মার্কেট ও সমবায় টুইন টাওয়ারের মাঝের সড়ক দখল করে আটটি পাকা দোকান নির্মাণ করা হয়েছে। এতে রেলওয়ে সুপার মার্কেটে প্রবেশের পথ অনেকটা সংকুচিত হয়ে পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, সড়ক দখল করে এভাবে দোকান নির্মাণের কারণে তারা ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। আর সিটি করপোরেশন বলছে, সড়কের জয়গা দখল করে দোকান নির্মাণ করা হলে অবশ্যই উচ্ছেদ করা হবে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গত ৬ আগস্ট বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউ এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। ওই অভিযানে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের পেছনে সিটি করপোরেশনের মালিকানাধীন উদয়ন মার্কেটের আশপাশ এবং গোলাপ শাহ মাজার থেকে গুলিস্তান আন্ডারপাস পর্যন্ত সড়কের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। তবে তখন এই সড়কটিতে যাননি করপোরেশনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। ওই এলাকায় অভিযান শেষ হলে গভীর রাত থেকে রেলওয়ে সুপার মার্কেট ও সমবায় টুইন টাওয়ারের মাঝের সড়ক দখল করে দোকানগুলো নির্মাণ শুরু করা হয়। দখলদারদের ধারণা, যেহেতু এলাকায় অভিযান শেষ করেছে সিটি করপোরেশন; এখন সড়ক দখল করে দোকান নির্মাণ করলে তা সহজে উচ্ছেদ হবে না।

সরেজমিন দেখা গেছে, বেশ কয়েকজন রাজমিস্ত্রি দোকানগুলো নির্মাণ করছেন। এরইমধ্যে দোকানগুলোর চারদিকে ইটের গাঁথুনির কাজ শেষ করা হয়েছে। ছাদ ঢালাইয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে শ্রমিকরা জানান, সমবায় টুইন টাওয়ার মার্কেট সমিতির লোকজন তাদের দোকানগুলো নির্মাণ করতে দিয়েছেন। কাজ শেষ হতে আর একদিন লাগতে পারে।পাকা দোকান নির্মাণ করে রাস্তা দখল

রেলওয়ে সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এই পথ দিয়েই আমাদের দোকানে মালামাল আনা নেওয়ার পাশাপাশি গ্রাহকরা আসেন। কিন্তু এভাবে রাস্তা দখল করে দোকান নির্মাণের কারণে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবো। আর এভাবে রাস্তায় দোকান নির্মাণ কীসের ভিত্তিতে করা হচ্ছে? আমরা মার্কেট সমিতিকে জানিয়েছি। তারা দোকান নির্মাণ থেকে সরে আসেনি। সিটি করপোরেশনকেও জানিয়েছি। তারাও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।’

জানতে চাইলে মার্কেট সমবায় সমিতির পরিচালক হানিফ শেখ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এই দোকানগুলোর বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না। আমি অসুস্থ। আপনি আমাদের সভাপতি কামাল সাহেবের সঙ্গে কথা বলেন।’

সমিতির সভাপতি মো. কামালকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

সড়ক দখল করে নির্মিত অবৈধ এসব দোকান প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইরফান উদ্দিন আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘যেকোনও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে হলে আমাদের মেয়রের অনুমোদন লাগে। এক্ষেত্রে কেউ যদি একটা লিখিত অভিযোগ করেন তাহলে আমরা দ্রুত ফাইল প্রসেসিং করতে পারি। তখন মেয়র দ্রুত ব্যবস্থা নিতে আমাদের নির্দেশ দেন। এর বাইরে আমরা আমাদের কর্মীদের দিয়ে একটি সরেজমিন তদন্ত করাই। তারা রিপোর্ট দিলে সেই রিপোর্টে ওপর ভিত্তি করে পরবর্তীতে ফাইল উত্থাপন করা হয়। কেউ যদি সড়ক দখলে নিয়ে দোকান নির্মাণ করে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’