চূড়ান্ত পর্বে জুডিথার সংসদ ভবনের লেগোর মডেল

লেগো

‘বিল্ড বাংলাদেশ ইন লেগো’ প্রকল্পের আওতায় আন্তর্জাতিক পরিসরে বাংলাদেশের স্থাপত্য শিল্পকে তুলে ধরার উদ্যোগের অংশ হিসেবে সংসদ ভবনের লেগোর নকশা প্রয়োজনীয় ১০ হাজার ভোট পেয়েছে। এর মধ্য দিয়ে লেগো আইডিয়া প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বে পৌঁছে গেছে। ঢাকাভিত্তিক জেঅ্যান্ডজে লেগো ক্রিয়েশনের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসের (ইউল্যাব) বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য ও জেঅ্যান্ডজে’র জুডিথা ওলমাখার বাংলাদেশকে বিশ্বে ইতিবাচকভাবে তুলে ধরতে ব্র্যান্ডিং কর্মসূচির উদ্যোগ নেন। এই ব্র্যান্ডিং উদ্যোগের আওতায় বাংলাদেশের অনন্য সব স্থাপত্যশৈলীকে বিশ্বের মাঝে তুলে ধরার প্রয়াস শুরু করেন।

মার্কিন নাগরিক জুডিথ বাংলাদেশিকে বিয়ের পর ১৬ বছর ধরে ঢাকায় বাস করছেন। তিনি বলেন, 'আমি বাংলাদেশ ও দেশের মানুষকে ভালোবাসি। এই দেশ থেকে আমি যা পেয়েছি তার কিছুটা ফিরিয়ে দিতে চেয়েছি।’

টয়কন ২০১৮ সালে জুডিথা বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ভবন তৈরি করেন লেগো দিয়ে। এটি তৈরিতে লেগেছিল ৮ হাজার লেগো টুকরো।  ছোট একটি ট্যাবিলটপ সংস্করণও তিনি করেছিলেন। যা তৈরি হয়েছিল ১২৫ টুকরোতে। প্রতিযোগিতায় ক্ষুদ্র সংস্করণটি অংশগ্রহণ করে।

ওয়ার্ল্ড লেগো ওয়েবসাইটে এই মডেল যাতে গৃহীত হয় সেজন্য জুডিথা ডিজাইন তৈরি করে জমা দিয়েছেন আগেই। তবে জাতীয় সংসদ ভবনের পূর্ণাঙ্গ মডেলটি গৃহীত হতে লেগো ওয়েবসাইটে ১০ হাজার ভোট প্রয়োজন ছিল। অবশেষে প্রায় দুই বছর পর ১০ হাজার ভোট পড়েছে ডিজাইনটির পক্ষে। এই সময়ের মধ্যে তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, সম্মেলন ও ঢাকা লিট ফেস্ট-এর মতো আয়োজনগুলোতে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান। দেড় বছরের প্রচেষ্টায় সংগৃহীত হয় ৭ হাজার ভোট।

জুডিথা বলেন, ‘করোনার কারণে যখন শাটডাউন শুরু হলো তখন আমি বেশ উদ্বিগ্ন হয়ে যাই। কারণ প্রকল্পটির প্রচারে মানুষের কাছে যাওয়ার সুযোগ বন্ধ হয়েছে। কিন্তু গত কয়েক মাসে মানুষ যখন ঘরে কম্পিউটারে সময় দিচ্ছিলেন তখন প্রকল্পটির পক্ষে ভোট বাড়তে থাকে। এমন অগ্রগতির কথা আমি শুধু স্বপ্ন দেখতাম।’

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক পরিসরে শুধু পর্যটন ও গার্মেন্টস শিল্পের বাইরেও যে বাংলাদেশে অসাধারণ সব স্থাপত্য রয়েছে সেগুলো তুলে ধরার ক্ষেত্রে এই মাইলফলক অর্জন বাংলাদেশিদের জন্য অনুপ্রেরণা। লুই ক্যানের নকশায় তৈরি জাতীয় সংসদ ভবনকে বিশ্বসেরা একটি স্থাপত্যকর্ম বলে বিবেচনা করা হয়।

জুডিথা বলেন, ‘বাংলাদেশিদের কাছে এই ভবনের গুরুত্ব অনেক বেশি। তাদের কাছে এটি শুধু সংসদ ভবন নয়, এটি স্থিতিশীলতা, সম্মান ও মহত্ত্বের প্রতীক।’

বাংলাদেশ সংসদ ভবনের লেগো প্রকল্পটি প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোট পাওয়ায় এখন চূড়ান্ত পর্বে পৌঁছে গেছে। এই ধাপে বিশ্বের আরও ২৫টি প্রকল্পের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। নির্বাচিত হলে এটি আনুষ্ঠানিক লেগো সেট হিসেবে স্বীকৃতি পাবে এবং বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে দোকানগুলোতে পাওয়া যাবে।