‘হত্যার’ শিকার কিশোরীকে জীবিত উদ্ধার: স্বীকারোক্তি, নথি ও তদন্ত কর্মকর্তাদের তলব

সুপ্রিম কোর্টজীবিত থাকার পরও নারায়ণগঞ্জের এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আসামিদের স্বীকারোক্তি আদায় সংক্রান্ত মামলার সব নথি তলব করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ওই মামলায় তদন্তের সঙ্গে জড়িত দুই তদন্ত কর্মকর্তাকেও তলব করা হয়েছে। আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর তাদের হাইকোর্টে হাজির হতে বলা হয়েছে। সদর থানার কার্যক্রমের বৈধতা ও যৌক্তিকতার প্রশ্নে এই আদেশ দিয়েছেন আদালত।

এক আবেদনের (রিভিশন) শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।

এর আগে গত ২৫ আগস্ট ওই স্কুল ছাত্রী ফিরে আসার ঘটনায় হাইকোর্টে একটি রিভিশন আবেদন করা হয়। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় পাঁচ আইনজীবীর পক্ষে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির এই আবেদনটি দাখিল করেন। পাঁচ আইনজীবী হলেন- মো. আসাদ উদ্দিন, মো. জোবায়েদুর রহমান, মো. আশরাফুল ইসলাম, মো. আল রেজা আমির এবং মো. মিসবাহ উদ্দিন।

রিভিশন আবেদনে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় করা মামলা এবং মামলা পরবর্তী প্রক্রিয়ার শুদ্ধতা, বৈধতা এবং যৌক্তিকতা সম্পর্কে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। এছাড়া ওই মামলার নথি তলবেরও আবেদন করা হয়। নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ সুপার, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, মূল মামলার বাদী এবং আসামিদের বিবাদী করা হয়।

গত ২৪ আগস্ট 'ধর্ষণের পর নদীতে লাশ ফেলে দেওয়া স্কুল ছাত্রীর ৪৯ দিন পর জীবিত প্রত্যাবর্তন' শিরোনামে দেশের একটি জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরে সংবাদটি হাইকোর্টের নজরে আনেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। এরপর আদালত আইনজীবীকে লিখিতভাবে হাইকোর্টে আবেদন করতে বলেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৫ আগস্ট ওই ঘটনায় রিভিশন আবেদন দাখিল করা হয়।

উল্লেখ্য, শহরের দেওভোগ এলাকার ১৫ বছর বয়সী কিশোরী ৪ জুলাই বিকালে বাসা থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়। দীর্ঘদিন খোঁজ করে মেয়ের সন্ধান না পেয়ে এক মাস পর ৬ আগস্ট থানায় অপহরণ মামলা করেন কিশোরীর বাবা। এ ঘটনায় কিশোরীর মায়ের মোবাইলফোনের কল লিস্টের সূত্র ধরে গত ৭ ও ৮ আগস্ট পুলিশ একই এলাকার রকিব, আবদুল্লাহ ও খলিল নামে তিন জনকে গ্রেফতার করে। এদের মধ্যে খলিল নৌকার মাঝি। গ্রেফতারের পর তিন আসামি দুই দফা রিমান্ড শেষে কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যা করে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার কথা স্বীকার করে ৯ আগস্ট আদালতে জবানবন্দি দেয়। তবে পরে ওই কিশোরী জীবিত উদ্ধার হলে পুলিশের তদন্ত ও রিমান্ড কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

আরও পড়ুন-

ধর্ষণ ও হত্যার শিকার কিশোরী জীবিত উদ্ধার, তদন্ত কর্মকর্তা প্রত্যাহার

স্বজনদের থেকে নেওয়া ঘুষের টাকা ফেরত দিচ্ছেন এসআই শামীম!

ধর্ষণ ও হত্যার স্বীকারোক্তি আদায়ের পর কিশোরীকে জীবিত উদ্ধার, ঘটনা তদন্তে ২ কমিটি

জীবিত স্কুলছাত্রীকে হত্যার স্বীকারোক্তি, নথি চেয়ে আবেদনের শুনানি বৃহস্পতিবার