X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

ধর্ষণ ও হত্যার স্বীকারোক্তি আদায়ের পর কিশোরীকে জীবিত উদ্ধার, ঘটনা তদন্তে ২ কমিটি

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
২৫ আগস্ট ২০২০, ১৮:৩৫আপডেট : ২৫ আগস্ট ২০২০, ২১:০৪

(বাম দিক থেকে) রকিব, খলিল ও আব্দুল্লাহ দেওভোগের এক কিশোরীকে ধর্ষণ ও হত্যার বিষয়ে আদালতে তিন আসামির স্বীকারোক্তি দেওয়ার পর ওই কিশোরীর জীবিত উদ্ধারের চাঞ্চল্যকর ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ওই কিশোরীর অপহরণ, ফিরে আসা এবং তিন আসামির দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিসহ প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান ও ন্যায়বিচার নিশ্চিতে পুলিশ আন্তরিকভাবে কাজ করছে। চাঞ্চল্য সৃষ্টি করা মামলা, আসামিদের গ্রেফতার ও জবানবন্দির বিষয়সহ পুরো ঘটনার সঠিক রহস্য উদঘাটন করতে সোমবার রাতেই জেলা ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহেদ পারভেজ চৌধুরীকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। একইসঙ্গে পুলিশের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক জবানবন্দি আদায় ও আসামিদের পরিবারের থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগের বিষয় তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) এটিএম মোশারফ হোসেনকে প্রধান করে আরও একটি কমিটি গঠন করা হয়। পরের কমিটির প্রতিবেদন আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে মামলায় আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রোকন উদ্দিন অভিযোগ করেন, পুলিশ নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে কিশোরী উদ্ধারের পরও আদালতে এফআরটি (ফাইনাল রিপোর্ট) প্রদান না করে উল্টো তিন আসামির ১৬৪ ধারায় আদালতে দেওয়া জবানবন্দি প্রদানের সূত্র ধরে অন্য মামলায় আসামি হিসেবে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। তিনি দাবি করেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসামিদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায় করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, পুলিশ আদালতে এফআরটি (ফাইনাল রিপোর্ট) প্রদান না করলে আমরা ন্যায়বিচারের জন্য উচ্চ আদালতে আপিল করবো।

তবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) ওয়াজেদ আলী খোকন দাবি করেন, মামলা প্রত্যাহারের কোনও সুযোগ নেই। ভিকটিম উদ্ধার হয়েছে। বাদী যে মামলা করেছে এবং নতুন যে মামলা হবে, এই দুটি মামলা একসঙ্গে তদন্ত চলবে। তদন্ত শেষে প্রকৃত রহস্য বের হয়ে আসবে। তিনি বলেন, মামলার বাদী উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মামলাটি করেছেন কিনা বা কেন এই আসামিরা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে সেটি একটি রহস্য। এ কারণে পুরো বিষয়টি তদন্ত করে রহস্য উন্মোচন করতে হবে।

প্রসঙ্গত, শহরের দেওভোগ এলাকার বাসিন্দা ১৫ বছরের ওই কিশোরী গত ৪ জুলাই নিখোঁজ হয়। দীর্ঘদিন খোঁজ করে মেয়ের সন্ধান না পেয়ে এক মাস পর ৬ আগস্ট থানায় অপহরণ মামলা করেন তার বাবা। এ ঘটনায় কিশোরীর মায়ের মোবাইল ফোনের কললিস্টের সূত্র ধরে গত ৭ ও ৮ আগস্ট পুলিশ একই এলাকার অটোচালক রকিব, প্রেমিক আবদুল্লাহ ও নৌাকর মাাঝি খলিল নামে তিন জনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর এই তিন আসামি দুই দফা রিমান্ড শেষে কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার কথা স্বীকার করে ৯ আগস্ট আদালতে জবানবন্দি দেয়। বর্তমানে আসামিরা জেল হাজতে রয়েছেন। ঘটনার প্রায় ৫১ দিন পর রবিবার (২৩ আগস্ট) মোবাইল ফোনে খবর পেয়ে বন্দর উপজেলার নবীগঞ্জ এলাকা থেকে ওই কিশোরীকে জীবিত ফিরে পাওয়ার পর তার বাবা-মা বিষয়টি রাতে সদর থানায় জানায়। স্বজনদের দাবি, তাদের মেয়ে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী এবং অন্য এক যুবক ইকবাল হোসেনের সঙ্গে পালিয়ে বিয়ে করে ভাড়া বাসায় বসবাস করেছে। আসামিদের বিরুদ্ধে এখন তাদের আর কোনও অভিযোগ নেই এবং মামলাটি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের কথা জানান।

তবে মঙ্গলবার কিশোরীর মা ভিন্ন কথা বলেন। তিনি বলেন, আসামি আব্দুল্লাহ বন্ধু হিসেবে প্রায়ই তার মেয়ের সঙ্গে কথা বলতো। ঘটনার দিন মোবাইল ফোনে আমার মেয়েকে ডেকে নিয়েছে সে। ওই হিসেবে আব্দুল্লাহ দোষী। তবে আইন প্রশাসনের তদন্তে যে অপরাধ করেছে আমরা তার শাস্তি চাই। একইসঙ্গে তার মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়া ইকবাল হোসেনেরও শাস্তি চান তিনি।

আরও পড়ুন:
আদালতে ধর্ষণ ও হত্যার স্বীকারোক্তির পর কিশোরী জীবিত উদ্ধার!

 

/টিটি/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ভ্যাটেই মিলবে রাজস্ব, অথচ ভ্যাট বাড়াতে অনীহা
ভ্যাটেই মিলবে রাজস্ব, অথচ ভ্যাট বাড়াতে অনীহা
বাংলাদেশে দক্ষতা উন্নয়নে বিনিয়োগের ফল দৃশ্যমান হচ্ছে
গ্লোবাল স্কিলস ফোরামে বক্তারাবাংলাদেশে দক্ষতা উন্নয়নে বিনিয়োগের ফল দৃশ্যমান হচ্ছে
ভারতের লোকসভা নির্বাচনে দ্বিতীয় দফার ভোট কাল
ভারতের লোকসভা নির্বাচনে দ্বিতীয় দফার ভোট কাল
তীব্র গরমে পানি চাইতে চাইতেই ট্রাফিক পুলিশের মৃত্যু
তীব্র গরমে পানি চাইতে চাইতেই ট্রাফিক পুলিশের মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা