আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) জানায়, সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) তেজগাঁওয়ের বিএএফ শাহীন হলে বিমান বাহিনীর ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ক্ষণগণনা অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। এসময় তিনি দুইটি স্মারক ডাক টিকিটও উন্মোচন করেন। এই ক্ষণগণনা অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে বিমান বাহিনী সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের লক্ষ্যে সারাবছর ধরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যের শুরুতেই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। এছাড়া তিনি বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমানসহ মহান মুক্তিযুদ্ধে শাহাদাতবরণকারী সব শহীদদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত ও পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় জন্ম নেওয়া বাংলাদেশ বিমান বাহিনী সুবর্ণ জয়ন্তী পালনের লক্ষ্যে বছরব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, নিঃসন্দেহে তা নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অনুপ্রাণিত করবে।’
তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদাত্ত আহ্বানে সাড়া দিয়ে দেশের আপামর জনতার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বিমান বাহিনীর অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তান বিমান বাহিনীর পক্ষ ত্যাগ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণের পাশাপাশি বিমান বাহিনীর কর্মকর্তারা সেক্টর কমান্ডারের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও পালন করেছিলেন।’
প্রসঙ্গত, রক্তক্ষয়ী মহান মুক্তিযুদ্ধের সেই উত্তাল দিনগুলোতে যুদ্ধের গতি-প্রকৃতিকে সম্পূর্ণ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য একটি স্বতন্ত্র বিমান বাহিনী গঠনের প্রয়োজনীয়তা তীব্রভাবে অনুভূত হয়। আর এ লক্ষ্যে ১৯৭১ সালে ২৮ সেপ্টেম্বর একটি অটার বিমান, একটি ড্যাকোটা বিমান ও একটি অ্যালুয়েট হেলিকপ্টার এবং ৫৭ জন বাঙালি বৈমানিক, কারিগরি পেশার বিমান সেনা ও বেসামরিক বৈমানিকদের সমন্বয়ে ভারতে নাগাল্যান্ডের ডিমাপুরে ‘কিলো ফ্লাইট’ নামে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী যাত্রা শুরু করে। মহান মুক্তিযুদ্ধে ৫০টি বিমান অভিযান সাফল্যের সঙ্গে পরিচালনার মাধ্যমে ‘কিলো ফ্লাইট’ বিজয়কে ত্বরান্বিত করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিল।
ক্ষণগণনা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী সদস্যদের অবদান, আত্মত্যাগ, স্বাধীনতার চেতনা এবং দেশ প্রেমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী প্রতিষ্ঠার ওপরে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘কিলোফ্লাইট’ এবং মুক্তিযুদ্ধে বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমানের অবদানের ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান’ প্রদর্শন করা হয়।