আইসিডিডিআর-বি’র প্রথম বাংলাদেশি নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ

ড. তাহমিদ আহমেদআইসিডিডিআর-বি’র ৬৬ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম একজন বাংলাদেশি ড. তাহমিদ আহমেদ নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করবেন।

ড. তাহমিদকে আইসিডিডিআর-বি’র আন্তর্জাতিক বোর্ড অব ট্রাস্টিজ  পরবর্তী  নির্বাহী পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন বলে সংস্থাটির পক্ষ থেকে জানানে হয়েছে।

বুধবার ( ৩০ সেপ্টেম্বর) আইসিডিডিআর-বি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানায়।  ড. আহমেদ ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি নির্বাহী পরিচালক পদে প্রফেসর ক্লেমেন্সের স্থলাভিষিক্ত হবেন, যিনি ২০১৩ সাল থেকে এ পদে দায়িত্ব পালন করছেন।

এদিকে, নিয়োগ পাওয়ার পর  ড. তাহমিদ আহমেদ কোভিড-১৯ বিষয়ে গবেষণাকে  সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, ‘করোনার চলমান মহামারি রোধে এবং জনস্বাস্থ্যকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক গবেষণায় বিনিয়োগের অপরিসীম গুরুত্বকে  বিশেষভাবে মনে করিয়ে দেয়।’ 

ড. তাহমিদ গবেষণামূলক কাজ এবং শিশুর অপুষ্টি রোধ ও এর সহজ চিকিৎসা ব্যবস্থার  সন্ধানে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত।

তিনি ইতোমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাম্বুলেটরি পেডিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশন,কমনওয়েলথ সোসাইটি ফর পেডিয়াট্রিক গ্যাস্ট্রো- এন্টারোলোজি অ্যান্ড নিউট্রিশন এবং ভারতীয় পেডিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন জনস্বাস্থ্য সংস্থার পদক পেয়েছেন।   ২০১৮ সালে পান ইসলামি উন্নয়ন ব্যাংক ডেভেলপমেন্ট ট্রান্সফর্মারস পুরস্কার। 

প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব পালনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আইসিডিডিআর-বি’র প্রথম বাংলাদেশি নির্বাহী পরিচালক হওয়া নিঃসন্দেহে একটি গৌরবের বিষয়। ’

প্রতিষ্ঠানটি তাদের বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ড. তাহমিদ আহমেদ ১৯৮৫ সালে আইসিডিডিআর-বি’তে যোগ দেন এবং ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে আইসিডিডিআর-বি’র নিউট্রিশন ও ক্লিনিক্যাল সার্ভিসেস বিভাগের সিনিয়র ডিরেক্টর নিযুক্ত হন। 

ড. তাহমিদ আহমেদের পুষ্টি বিষয়ক গবেষণা এবং এর বাস্তবায়ন শিশুদের অপুষ্টি, যক্ষ্মা এবং ডায়রিয়া চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে, একইসঙ্গে তিনি শিশুদের তীব্র অপুষ্টি ও ডায়রিয়া চিকিৎসায় একটি প্রোটোকল তৈরি করেছেন, যার ফলে হাসপাতালে ভর্তি শিশুদের ক্ষেত্রে মৃত্যুর হার ৫০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। এছাড়াও তিনি স্থানীয় খাদ্য উপাদান দিয়ে সহজে ব্যবহারযোগ্য (রেডি-টু-ইউজ) এক ধরনের খাদ্য তৈরি করেছেন, যা তীব্র অপুষ্টি প্রতিরোধ ও চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হয়। তিনি অপুষ্টি, আন্ত্রিক রোগ এবং মানসিক বিকাশের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে কয়েকটি দেশে পরিচালিত ম্যালনিউট্রিশন -এন্টেরিক ডিজিজ (ম্যাল-এড) প্রকল্পের বাংলাদেশ অংশের প্রধান গবেষক। 

আন্তর্জাতিক জার্নাল এবং বইয়ে তার ৩৬০টি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।

ড. তাহমিদ আহমেদ ৫৪টি কমনওয়েলথভুক্ত দেশের শিশু পরিপাকতন্ত্র বিশেষজ্ঞদের সংগঠন পেডিয়াট্রিক গ্যাস্ট্রো-এন্টারোলজি অ্যান্ড নিউট্রিশন (ক্যাপগান)-এর সভাপতি ছিলেন।