রবিবার (২৫ অক্টোবর) বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা বলতে পারি অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০২১ যথাসময়েই হবে। ১ ফেব্রুয়ারি মেলার উদ্বোধন হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই এবারের মেলা হবে। তবে নভেম্বর-ডিসেম্বরে করোনা পরিস্থিতি যদি আরও খারাপ হয়, তখন পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্বশীলরা বলছেন, সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের সঙ্গে বসে মেলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে বাংলা একাডেমিকে। কারণ এখন বাংলা একাডেমি বললো বইমেলা হবে। সেই অনুযায়ী আমরা অর্থলগ্নি করে মেলায় বই প্রকাশের প্রস্তুতি নিলাম। কিন্তু পরে সরকারের অনুমতি না পেয়ে বাংলা একাডেমি যদি বলে মেলা হবে না, তাহলে প্রকাশকদের যে ক্ষতি হবে তা অপূরণীয়। তাই মেলা হবে নাকি হবে না একটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে। মাঝামাঝি থাকার কোনও সুযোগ নেই। তবে বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে মানুষ স্বাভাবিক জীবন যাপন করছে। শপিং মল, সিনেমা হল খুলে দেওয়া হয়েছে। ফলে বইমেলার আয়োজন করতে কোনও বাধা থাকতে পারে না।
আগামী প্রকাশনীর ওসমান গনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বাংলা একাডেমি মেলার আয়োজনের কাজ শুরু করেছে এটা ঠিক। কিন্তু তারা যে কথাটা বলছে যে সরকার যদি কোনও সময় বন্ধ করে দেয় তাহলে এটাতে আমাদের কোনও আপত্তি করা যাবে না। এটা একটা নেগেটিভ বিষয়। এটাতে আমার অবজারভেশন হচ্ছে বাংলা একাডেমি সরকারসহ সংশ্লিষ্ট পক্ষের পূর্ব অনুমতি না নিয়ে কাজ শুরু করেছে। বলা যেতে পারে যে তারা প্রধানমন্ত্রীর কোনও অনুমতি না নিয়ে কাজটা শুরু করেছে। তিনি আরও বলেন, তাই বন্ধ করে দিলে আপত্তি করা যাবে না এই ধরনের কথা বলতে হচ্ছে তাদের। এখানে নেগেটিভ বিষয় হচ্ছে, মেলার আয়োজনের কাজ শুরু আগেই যার যার অনুমতি দরকার তা নিয়ে নিতে হবে। দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে, যখন একটা বইমেলা হয় তখন আমাদেরও একটা প্রস্তুতির বিষয় থাকে। এখন আমরা মেলার প্রস্তুতি নিলাম, তখন যদি মেলা না হয় তার ক্ষতিপূরণ কে দেবে?
বাংলা একাডেমির সূত্র জানায়, এবারের করোনার স্বাস্থ্যবিধির কারণে মেলার স্টলের সংখ্যা কিছুটা কমতে পারে। কিন্তু কত কমবে এই মুহূর্তে বলা কঠিন। কারণ গতবার মেলায় যারা অংশ নিয়েছে তাদের প্রত্যেকেই আগামী মেলায় অংশ নিতে আগ্রহী। ফলে কোনও প্রকাশনী প্রতিষ্ঠানকে বাদ দেওয়া খুব সহজ বিষয় না। তাই নভেম্বর মাসে মেলার স্টলের ডিজাইন করার আগ পর্যন্ত আগামী মেলায় কতটি স্টল করা হবে তা এই মুহূর্তে বলা কঠিন।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ১০০ বই করার কথা রয়েছে বাংলা একাডেমির। এখন পর্যন্ত সংস্থাটি ২৭টি বই প্রকাশ করছে বলে দাবি প্রতিষ্ঠানটির।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে ড. জালাল আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে একশ বই করার কথা রয়েছে বাংলা একাডেমির। এরমধ্যে ২৭টি বই বেরিয়েছে। ৩ বছরে ১ শত বই করার কথা রয়েছে। সেইভাবে আমরা আগাচ্ছি। এবারের (আগামী) বইমেলায়ও বঙ্গবন্ধুর ওপর ২০ থেকে ২৫টি বই প্রকাশিত হবে।
প্রসঙ্গত, বাংলা একাডেমির তথ্য মতে অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০২০ এ মেলায় ৮২ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়েছিল। নতুন বই প্রকাশিত হয়েছিল ৪ হাজার ৯১৯টি। বাংলা একাডেমি প্রকাশ করেছিল ৪১টি নতুন বই। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বাংলা একাডেমি অংশে সব মিলিয়ে ৫৬০টি প্রতিষ্ঠানকে ৮৭৩টি ইউনিট বা স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল।
ছবি: সাজ্জাদ হোসেন