সপ্তাহজুড়ে বাড়েনি কোনও নিত্যপণ্যের দাম

কাঁচা বাজার


নিত্যপণ্যের দাম এখন সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। তবে গত সপ্তাহটি ছিল মন্দের ভালো। কারণ, পুরো সপ্তাহজুড়ে কোনও নিত্যপণ্যের দাম নতুন করে বাড়েনি। শুধু তা-ই নয়, গত সপ্তাহে অর্ধ ডজন পণ্যের দাম কমেছে। অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়া সবজির দামও কিছুটা কমেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকারে কঠোর নজরদারির পাশাপাশি বাজারে পণ্যের সরবরাহ বাড়ার কারণেই দাম কমে এসেছে। দাম কমার তালিকায় পেঁয়াজ, আলু,  ডাল, আদা, মুরগি, সয়াবিন তেল ও ডিম রয়েছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, দাম কমার তালিকায় শীর্ষে রয়েছে পেঁয়াজ। গত এক সপ্তাহে আমদানি করা পেঁয়াজের কেজিতে দাম কমেছে ১০ টাকা। আর দেশি পেঁয়াজের দাম কমেছে কেজিতে ৫ টাকা। প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ এখন ৮০ টাকাতে বিক্রি হচ্ছে। আর আমদানি করা পেঁয়াজের দাম এখন ৫৫ টাকা কেজি। গত সপ্তাহে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৬৫ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮৫ টাকা কেজি। সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবি’র হিসেবে গত এক সপ্তাহে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কমেছে ১১.১১ শতাংশ।
গত সপ্তাহের ৪৫ টাকা কেজি আলু এখন ৪০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। তবে নতুন আলু বাজারে এলে দাম আরও কমে আসবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এছাড়া কেজিতে ১০ টাকা কমেছে আদার দামও। ২৪০ টাকায় আমদানি করা আদা শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) বিক্রি হয়েছে ২৩০ টাকায়। ১০০ টাকা কেজি দেশি আদা বিক্রি হয়েছে ৯০ টাকা কেজি দরে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ডিমের হালিতে ২ টাকা কমেছে। ৩৭ টাকা হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা দরে। ১২৫ টাকা কেজি দামের মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা। ৯৭ টাকা লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ৯৫ টাকা। 
পুরো সপ্তাহজুড়ে কোনও জিনিসের দাম না বাড়ার কারণে ক্রেতারা এটাকে মন্দের ভালো বলছেন। বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা রিমি দাস বলেন, ‘গত সপ্তাহের তুলনায় জিনিসপত্রের দাম না বাড়াকে সাধুবাদ জানাই। তবে এখনও অধিকাংশ পণ্যের দাম রয়েছে ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। কারণ, করোনায় আমাদের আয় কমে গেলেও ব্যয় কমেনি। এজন্য সব জিনিসের দাম কমে আসা উচিত।’

তিনি বলেন, সরকার দুই দফায় আলুর দাম বেঁধে দিলেও বাজারে সরকারের নির্দেশনার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। কোথায় সরকারের বেঁধে দেওয়া দর ৩৫ টাকা কেজি আলু পাওয়া যাচ্ছে না। তার মতে, আগের সপ্তাহের তুলনায় সবজির দামও কমেছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে সবজির দাম আরও কমা উচিত।
সবজির বাজারে দেখা যায়, গত সপ্তাহের তুলনায় ফুলকপি, বেগুন, পেঁপে ও গাজরের দাম কিছুটা কমেছে। শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, প্রতিকেজি ১০০ টাকার নিচে রয়েছে অধিকাংশ সবজির দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে গাজরের দাম প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। খুচরা বাজারে গাজরের কেজি ৫০-৭০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। অথচ এক সপ্তাহ আগে গাজরের কেজি ১০০ টাকা ছিল। খুচরার পাশাপাশি পাইকারিতেও গাজরের দাম কমেছে।
মানিকনগর এলাকার সবজি ব্যবসায়ী রবিউল হক বলেন, সব ধরনের সবজির দামই কমেছে। গত সপ্তাহে এক কেজি গাজর ১০০ টাকায় বিক্রি করেছি। এখন ৭০ টাকা কেজি বিক্রি করছি। তিনি বলেন, ‘সরবরাহ বাড়ায় দাম কমেছে। কিছু দিনের মধ্যে অন্যান্য সবজির দামও কমে আসবে। শিম ও পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকায়। শসার কেজি ৫০ টাকা। বরবটি, উচ্ছে ও বেগুনের কেজি ৮০ টাকা করে। পটলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা, গত সপ্তাহের মতো ঢেঁড়সের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা।  প্রতিকেজি ঝিঙা, কাঁকরোল, ধুন্দল, কচুর লতির দাম ৭০ টাকা। লাউয়ের পিস ৭০ টাকা। প্রতি হালি কাঁচা কলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা। শীতের আগাম সবজি ফুলকপি ও বাঁধাকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকায়। দাম কমেছে কাঁচা মরিচেরও। এক কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৮০-২০০ টাকা।’