সংবাদ সম্মেলনে ডিসি হারুন অর রশিদ বলেন, ‘জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল থেকে ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রায়ই মাইন্ড এইড হাসপাতালে রোগী পাঠাতেন। ঘটনার দিন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আনিসুলকে তার কর্মস্থল থেকে ঢাকায় এনে স্বজনরা জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে নিয়ে যান। সেখানে একজন চিকিৎসক পান তারা। তিনি রোগীকে না দেখেই দুটি ইনজেকশন লিখে দেন। হাসপাতালের এক কর্মচারী নিচেই পুলিশ কর্মকর্তাকে ইনজেকশন পুশ করেন। পরে আনিসুলের স্বজনরা হাসপাতালটির রেজিস্ট্রার ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুনের কাছে যান। মামুন তাদের পরামর্শ দেন, তার হাসপাতালে এ ধরনের রোগীর খুব ভালো চিকিৎসা পাওয়া যায় না। দ্রুত রোগীকে মাইন্ড এইডে ভর্তি করলে তারা ভালো চিকিৎসা পাবেন।
‘এর পরই মাইন্ড এইডের ম্যানেজার আরিফকে ফোন করে জানান, তিনি একজন রোগী পাঠাচ্ছেন। যেন দ্রুত ভর্তি করানো হয়। ওই চিকিৎসকের কথায় আস্থা রেখে স্বজনরা মাইন্ড এইডের দিকে আনিসুলকে নিয়ে যান। আনিসুলকে হত্যার পর আবার মাইন্ড এইড হাসপাতাল থেকে ডা. মামুনকে ফোন করা হয়। মামুন গিয়ে মারা গেছেন জেনেও আনিসুলকে ওই হাসপাতাল থেকে বের করে অন্য হাসপাতালে ভর্তির জন্য দৌড়ঝাঁপ চালান। যেন কোনোভাবেই তার দায়িত্ব অবহেলা না বোঝা যায়।’
সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগী বের করে বেসরকারি হাসপাতাল দেওয়ার পেছনে ডা. মামুনের সুবিধা কী, জানতে চাইলে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘একজন রোগীকে ওই হাসপাতলে পাঠালে দালাল ৩০ শতাংশ কমিশন পেয়ে থাকে। ডা. মামুন ৩০ শতাংশ কমিশনের লোভে নিজেই রোগী ভাগাতে সাহায্য করেন।’
তিনি জানান, এএসপি আনিসুল করিম হত্যায় এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাছাড়া দালাল চক্রের ২৫ সদস্যকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এরই মধ্যে আনিসুলের মৃত্যুর ঘটনায় চার জন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। তাদের বক্তব্যে মাইন্ড এইডের অপকর্মে ডা. মামুনের সম্পৃক্ততার তথ্য উঠে এসেছে।
গত ৯ নভেম্বর বেলা ১১টায় আদাবরের মাইন্ড এইড হাসপাতালে চিকিৎসা করতে গিয়ে হাসপাতালটির কর্মচারীদের মারধরের পর আনিসুল করিম শিপন নিহত হন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। তিনি ৩১তম বিসিএস পুলিশে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছিলেন। এই ঘটনায় নিহতের বাবা ফয়েজ উদ্দিন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। আরও পড়ুন:
মানসিক হাসপাতালে মারধরে এএসপির মৃত্যুর অভিযোগ
এএসপি আনিসুল করিমের মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলা