‘যাত্রীদের কোয়ারেন্টিনে রাখার সামর্থ্য না থাকায় করোনা এসেছে’

 

১০০

ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেছেন, বিভিন্ন দেশ থেকে তিন মাসে ছয় লাখের ওপরে যাত্রী এসেছিলেন। এত বিশাল সংখ্যক যাত্রীকে কোয়ারেন্টিনে রাখা, তাদের খাওয়া-দাওয়া করানোর সামর্থ্য আমাদের ছিল না। যার ফলে এই লোকগুলোর মাধ্যমে দেশে করোনা এসেছে।

রবিবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ব্র্যাক হিউম্যানিটারিয়ান প্রোগ্রাম আয়োজিত ‘বৈশ্বিক মহামারি ও সামাজিক দুর্যোগ প্রতিরোধে তরুণদের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

এনামুর রহমান বলেন, ‘দুর্যোগে বাংলাদেশ সরকার এখন বিশ্বের রোল মডেল। আগে ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচিই ছিল, এখন সেখান থেকে বেরিয়ে আমরা ঝুঁকি নিরসনে কাজ করছি।’ তিনি তরুণদের কাছে অঙ্গীকার করেন তাদের কল্যাণে বিনিয়োগ আরও বাড়াবেন। সেই সঙ্গে  নিরাপত্তার জন্য যে ৯৯৯ অ্যাপস আছে, সেটার কার্যক্ষমতা আইসিটির সঙ্গে কথা বলে সহজ ও উন্নত করবেন। প্রতিমন্ত্রী ব্র্যাকের এই আয়োজনকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘এমন আয়োজন বারবার হলেই সচেতনতা বাড়বে। তাদের প্রতি সরকার যে পৃষ্ঠপোষকতা করছে, সেটা অব্যাহত থাকবে।’

বাংলাদেশ করোনা মোকাবিলায় আমেরিকা, ইউরোপ, ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে অনেক ভালো অবস্থানে আছে বলে দাবি করেন প্রতিমন্ত্রী  এনামুর রহমান। তিনি বলেন, ‘গবেষণায় প্রকাশ পেয়েছে যে, মহামারি ব্যবস্থাপনায় আমরা পৃথিবীর ২০তম রাষ্ট্র। আমেরিকা, ইউরোপ, ভারত, পাকিস্তানের চেয়েও অনেক ভালো অবস্থানে আছি। আমাদের সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার লোকসংখ্যার তুলনায় অনেক কম।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা পরিষদের সহকারী অধ্যাপক তৌহিদুল হক বলেন, ‘আমাদের সামাজিক দুর্যোগের জন্য তেমন ওষুধ প্রয়োজন। এর পেছনে যে অপশক্তি আছে, তাদের যদি বের করা যায়, তাহলে এই চক্রটাকে নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। একে একে সব সমস্যার সমাধান হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রত্যেক তরুণের একটা নিজেস্ব দায়িত্ব আছে। সেটা তারা পালন করলেই ফলাফল আসবে।’

ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার সাথিরা জাকির জেসি বলেন, ‘খেলাধুলা থেকে শুরু করে পড়াশোনা, সব ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের ছেলেদের থেকে মেয়েরা এগিয়ে। তবু বৈষম্যের শিকার হতে হয় নারীদের। এখন তরুণরাই পারবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে এসব প্রতিরোধ করতে।’

ব্র্যাক হিউম্যানিটারিয়ান প্রোগ্রামের পরিচালক সাজেদুল হাসান বলেন, ‘তরুণদের একটা প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে দিতেই কাজ করে যাচ্ছে ব্র্যাক। এই ইয়ুথ এনগেজমেন্ট হতে পারবে অনেক বড় একটা প্ল্যাটফর্ম। এর মাধ্যমে সবাই একটা পরিচয় পাবে। সবাই একটা সুযোগ পাবে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর।’ প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি সামাজিক দুর্যোগ প্রতিরোধ করতে তরুণ সমাজের এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে বলে জানান সাজেদুল হাসান। তিনি বলেন, ‘যারা সাড়াদান কর্মসূচিতে কাজ করতে চায়, তাদের একটা ডেটাবেজ তৈরি করা প্রয়োজন। এতে এলাকাভিত্তিক কার্যক্রম করতে সুবিধা হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘জনসচেতনতা এবং সবার কাছে সতর্ক বার্তা পৌঁছে দিতে কাজ করতে হবে তরুণ প্রজন্মকে। যেমন, টিকা যখন আসবে, বাংলাদেশে তখন এই তরুণ প্রজন্মই পারবে ক্যাম্পেইন করে সচেতন করতে। পাশাপাশি কমিউনিটি রেডিওতে সচেতনতার কথা সবার কাছে পৌঁছে দিতে।’