লিবিয়ায় মানবপাচারের অভিযোগে দায়ের করা মামলার ছয় পলাতক আসামির বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারির দুই মাসের মাথায় দুই মানবপাচাকারী গ্রেফতার হয়েছে। গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলো, ইকবাল জাফর ও শাহাদাত হোসেন। ইকবাল জাফর ইতালিতে গ্রেফতার হলেও শাহাদাত হোসেন গ্রেফতার হয়েছে ঢাকা বিমানবন্দরে। বাকিদের অবস্থান ও গতিবিধির ওপর নজর আছে।
শুক্রবার (১৫ জানুয়ারি) সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিটের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার জিসানুল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
সিআইডি জানায়, শাহাদাত হোসেনকে দুবাই থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করার সময় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গ্রেফতার করা হয়। অপরদিকে ইতালির কসেঞ্জা শহরে ইকবাল জাফরকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। খুব শিগগিরই তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করবে পুলিশের সংশ্লিষ্ট শাখা।
লিবিয়ায় পলাতক অন্য চার আসামি হলো, তানজিরুল, স্বপন, নজরুল ইসলাম মোল্লা ও মিন্টু মিয়া। এদের মধ্যে নজরুলের বাড়ি মাদারীপুরে। বাকি তিন জনের বাড়ি কিশোরগঞ্জে বলে ইন্টারপোলের নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের সবার বিরুদ্ধে বিদেশে মানবপাচার, আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায়, এমনকি হত্যার অভিযোগও রয়েছে।
সিআইডি বলছে, ভাগ্য বদলাতে লিবিয়া হয়ে ইতালি যাত্রায় দালাল চক্রের ফাঁদে পড়ে প্রতিনিয়ত নিরুদ্দেশ হচ্ছেন অগণিত বাংলাদেশি তরুণ। নৌকায় করে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়েও এদের অধিকাংশ মারা যাচ্ছেন। মোটা অঙ্কের অর্থ আদায়ের পর লিবিয়া থেকে ইতালির উদ্দেশে ভূমধ্যসাগরে কোনোরকম একটি কাঠের নৌকায় তুলে দিয়ে দায় সারে দালালরা। এ কাজটাকে তারা বলে ‘গেমিং’।
যাদের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করা হয়েছে তারা এই ‘গেমিংয়ের’ হোতা। এমন আরও অন্তত ২০ জন ‘গেমিং’ হোতার তথ্য পাওয়া গেছে। বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা গেলে তাদের বিরুদ্ধেও নোটিশ জারির প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জানায় সিআইডি।
সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিটের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার জিসানুল হক বলেন, ‘এ ঘটনায় দেশে ২৬টি মামলা হয়েছে। এরমধ্যে ২৫টি মামলার তদন্ত করছে সিআইডি। এফআইআরভুক্ত আসামির সংখ্যা ২৯৯ জন। এখন পর্যন্ত গ্রেফতার আছে ১৭১ জন। ৪২ জন ইতোমধ্যে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে।