মানবতাবিরোধী অপরাধ: তিন আসামির আমৃত্যু ও পাঁচ জনের ২০ বছরের কারাদণ্ড

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ময়মনসিংহের তিন আসামিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং পাঁচ আসামিকে ২০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে একজনকে খালাস দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

রায়ে মো. সামসুজ্জামান ওরফে আবুল কালাম, এএফএম ফয়জুল্লাহ (পলাতক), আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডলকে (পলাতক) আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ২০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়- মো. খলিলুর রহমান, মো. আব্দুল্লাহ, মো. রইছ উদ্দিন আজাদী ওরফে আক্কেল আলী, আলিম  উদ্দিন খান (পলাতক) এবং সিরাজুল ইসলাম তোতাকে। এছাড়াও অভিযোগ থেকে খালাস পাওয়া একমাত্র আসামি হলেন আবদুল লতিফ। 

বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ রায় দেন।

ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশন পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম, সাহিদুর রহমান, রেজিয়া সুলতানা চমন প্রমুখ। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুস শুকুর খান ও আব্দুস সাত্তার পালোয়ান।

এর আগে ২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারি মামলাটি রায়ের অপেক্ষমান (সিএভি) রেখেছিলেন ট্রাইব্যুনাল। তবে করোনার কারণে দীর্ঘদিন কার্যক্রম বন্ধ থাকার পর চলতি বছরের প্রথম রায় ঘোষণার জন্য দিন নির্ধারণ করেন ট্রাইব্যুনাল।

প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন বলেন, ২০১৮ সালের ৪ মার্চ চারটি অভিযোগে ময়মনসিংহের ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছিল ট্রাইব্যুনাল। তবে বিচার চলাকালীন সময়ে দুই জন আসামি-মো. আব্দুল মালেক আকন্দ ওরফে আবুল হোসেন ওরফে আবুল মেম্বার (৬৮) ও নুরুল আমীন শাজাহান মারা যান। গ্রেফতার আছেন- ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানার নিগুয়ারী ইউনিয়নের সাধুয়া গ্রামের মো. খলিলুর রহমান মীর (৬২), একই গ্রামের মো. সামসুজ্জামান ওরফে আবুল কালাম (৬৫), একই গ্রামের মো. আব্দুল্লাহ (৬২), মো. রইছ উদ্দিন আজাদী ওরফে আক্কেল আলী (৭৪)।

আসামি আব্দুল লতিফ সেচ্ছায় ট্রাইব্যুনালে হাজির হন। এছাড়া পলাতক আছেন- এএফএম ফায়জুল্লাহ, মো. আব্দুর রাজ্জাক মন্ডল, সিরাজুল ইসলাম ও মো. আলীম উদ্দিন খান। 

আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও মুক্তিপণ আদায়ের চারটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে চার জনকে হত্যা, ৯ জনকে আটক ও নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানার নিগুয়ারী ইউনিয়নের সাধুয়া গ্রাম ও টাঙ্গাব ইউনিয়নের রৌহা গ্রাম এলাকায় তারা এসব অপরাধ করেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।