ক্ষতিগ্রস্ত প্রকাশকদের  ১০ কোটি টাকার প্রণোদনা দাবি

প্রকাশকদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ১০ কোটি টাকার প্রণোদনা চেয়েছে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি। প্রকাশকদের অনুৎপাদনশীল বিনিয়োগের ক্ষতিপূরণ হিসেবে ন্যূনতম ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে সরকারের কাছে। বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি এবং বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির মাধ্যমে এই ক্ষতিপূরণ ৪১৩ টি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া যেতে পারে বলে দাবি করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।

বইমেলার শেষ দিন ১২ এপ্রিল বইমেলার স্বাধীনতা স্তম্ভে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহ-সভাপতি শ্যামল পাল।

এছাড়া সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় দফতর-অধিদফিতর সরকারি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসমূহের মুজিববর্ষ উপলক্ষে বা ধারাবাহিক বই ক্রয় কমিটিতে সমিতির প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানানো হয়। বাংলাদেশ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ও বিক্রেতাদের জন্য এক হাজার কোটি টাকার সহজ শর্তে ও স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করা। রাষ্ট্র ও সরকারের আরও যেসব প্রণোদনা বিভিন্ন শিল্প সেক্টরের জন্য রয়েছে সেসব প্রণোদনা প্রকাশক ও বিক্রেতা দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে সংবাদ সম্মেলনে।

শ্যামল পাল বলেন, সমিতির পক্ষ থেকে প্রতিটি স্টলেই কি পরিমাণ বই বিক্রি হয়েছে তার সংগ্রহের জন্য একটি ফরম দেওয়া হয়। সেই ফরমের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এমন হিসাব বলছেন তারা। মেলায় যারা অংশগ্রহণ করেছেন সব স্টল থেকেই এসব তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। শুধু বাংলা একাডেমির যেসব স্টল রয়েছে, এবং বিভিন্ন সংগঠনগুলোর বিক্রি তালিকা এখানে যোগ করা হয়নি।

এবারের বইমেলায় ৩ কোটি ১১ লাখ ৯১ হাজার ৯২৮ টাকার বই বিক্রি হয়েছে। ৩০টি প্যাভিলিয়নের মোট গড় বিক্রয়ের পরিমাণ ৮৯ লাখ ৩০ হাজার ২৩০টাকা।

প্রকাশকরা বই মেলাকে কেন্দ্র করে তাদের বিনিয়োগের ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ টাকা তুলে আনতে পারেন অন্যান্য বছর। বাকি বিনিয়োগ সারাবছর সমগ্র দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রেতাদের মাধ্যমে তুলে আনা হয়। ২০২০ সালে মেলায় দেশব্যাপী করোনার বিপর্যয়ের কারণে প্রকাশক ক্রেতাদের থেকে ৭০ শতাংশ বিনিয়োগের টাকা তুলে আনতে পারেননি। এ বছর তা দাঁড়ালো শতভাগে।

প্রকাশকরা দাবি করেন, মন খারাপের বইমেলা ছিল এটি প্রকাশকদের। প্রচণ্ডভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তারা। প্রধানমন্ত্রীর কাছে সুদৃষ্টির আবেদন করেন প্রকাশক নেতারা।

বইমেলায় বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে বারবার মেলার সময় পরিবর্তন উল্লেখ করেন প্রকাশকরা। মেলার কাঠামো বিন্যাস বই মেলার মূল মাঠে প্যাভিলিয়ন রেখে অন্যান্য প্রতিষ্ঠান দূরে ঠেলে দেওয়া, চলমান লকডাউন, চৈত্র মাসের প্রচণ্ড দাবদাহে মেলার সময় নির্ধারন করাকেও উল্লেখযোগ্য কারণ হিসেবে তুলে ধরেন।