করোনা সংক্রমণ থেকে মানুষকে রক্ষা করতে সরকার বিধিনিষেধ জারি করে ঘরে থাকার নির্দেশ দিলেও গভীর রাত পর্যন্ত দলবেধে আড্ডা, বাইক রেস কিছুই বাদ নেই। রাজধানীর রাস্তাঘাটগুলো অনেকটা ফাঁকা। সন্ধ্যার পর তারাবির নামাজ ও লকডাউনের বিধিনিষেধের কারণে আরেকটু বেশি নিরিবিলি। আগারগাঁওয়ের সরকারি অফিসগুলোর সামনের রাস্তাটির একপাশ আটকে রাখায় সেখানে এখন রোজই মেলা বসে। অথচ শেরেবাংলানগর থানা এখান থেকে খুবই কাছে। তারা বলছেন, তাদের টহল টিম সক্রিয়।
মঙ্গলবার রাত ৯টা থেকে ১০টা। সরজমিনে দেখা গেল, রাস্তার পাশের গাছের প্রতিটা গোড়ায় বসার সুব্যবস্থা আছে।
সেইখানে গোল হয়ে কোনওরকম সামাজিক দূরত্ব ছাড়া বসে আছে তরুণ যুবক নারী শিশুও। রাস্তাটিতে দশ পনেরোটা বাইক নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করছে। তারা থেকে থেকে হল্লা করছে। কেন লকডাউনে বের হয়েছেন প্রশ্নে রুনা বলেন, এখানে আমরা প্রায় আড্ডা দিয়ে থাকি। এখন বাসায় থেকে বোর লাগছিল, তাই যাদের বাসা কাছাকাছি তারা এসেছি। পুলিশ বা কেউ এখানে এসময়ে বসতে নিষেধ করেছে কিনা প্রশ্নে তিনি বলেন, আমিতো কালকেও এসেছি। এখানে যে আসা যাবেনা সেটাতো কেউ বলেনি।
বুধবার। রাত ৯টা থেকে ১০টা। একই রাস্তা। এইদিনে আরও জমজমাট। বাইকের সংখ্যা বেড়ে ত্রিশের কাছাকাছি। পুরো রাস্তা জুড়ে চলছে আনন্দ উৎসব। পুরো রাস্তাজুড়ে বাইক চালিয়ে পর্যটন করপোরেশন ভবনের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে অনেকে। বিধিনিষেধ অমান্য করে রাস্তায় বাইক নিয়ে নেমেছেন কেন প্রশ্নে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া অনিক বলেন, সবইতো চলছে। আর এই রাস্তাটা বন্ধ। আমাদের যে বন্ধুরা বাইক চালাতে জানে না আমরা কয়েকজন মিলে তাদের চালানো শিখাচ্ছি।
যদিও শেরেবাংলা নগর থানার পরিদর্শক অপারেশন মো. আহাদ হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, থানা এলাকার বিভিন্ন জায়গায় আমাদের পেট্রোলিং জোরদার রয়েছে। আগারগাঁও তালতলায় নিম্ন আয়ের মানুষদের আবাসস্থল বেশি রয়েছে। অনেক সময় পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে তারা রাস্তায় বের হচ্ছেন ঘোরাফেরা করছেন। থানা এলাকার বিভিন্ন জায়গায় পেট্রোলিংয়ের মাধ্যমে জনগণকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে সচেতনতা বোধ জাগ্রত করার পাশাপাশি সব ধরনের নজরদারি আমরা চালিয়ে যাচ্ছি। আগারগাঁওয়ের এই এলাকার রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় পুলিশি ব্যারিকেড থাকলেও এর মধ্যেই অনেকেই মোটর সাইকেল মহড়া জমায়েত হচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুলিশের উপস্থিতি টের পেলে তারা যে যার মতো সরে পড়েন।