লাল কলা, লাল কাঁঠাল!

চিরচেনা হলুদ রঙয়ের কলা নয়। লাল রঙয়ের কলা। সবুজ-হলুদ মিশেলের কাঁঠালও নয়, এটিও লাল। দুটি ফলই উজ্জ্বল লাল বর্ণের। কোনও রাসায়নিক রঙ ব্যবহার ছাড়াই চেনা-পরিচিত ফলের এই রঙ দেখে খটকা লাগতে পারে। জৈব কৃষি বিজ্ঞানী ড. নজরুল ইসলাম ঝিনাইদহে তার কৃষি খামারে উৎপাদন করেছেন এই লাল কলা, আর আগামী বছর হবে লাল কাঁঠাল। মূলত বিদেশি জাতের এই গাছে দেশের মাটিতে ফলন আনতে সক্ষম হয়েছেন তিনি।লাল কাঁঠাল

ড. নজরুল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স করেন। উভয় পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণি লাভ করেন তিনি। পরে জাপান থেকে পিএইচডি সম্পন্ন করেন। দেশে ফিরে তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশন ও জাপানের হিউম্যান ডেভলপমেন্ট টেলিভিশনের যৌথ উদ্যোগে ডক্যুমেন্টারি তৈরির কাজ করেন। করোনাকালে সেই কাজ স্থগিত আছে। বর্তমানে ড. নজরুল বাংলার মৎস্য-কৃষি উন্নয়নে গবেষণা করছেন।

লাল কলা

ঝিনাইদহ কোটচাঁদপুরে দশ বিঘা জমিতে এখন তিনি জৈব কৃষি নিয়ে কাজ করছেন। বিদেশি নানা জাতের ফল উৎপাদন, এলাচ, জিরা কী নেই সেখানে। নজরুল ইসলাম বলেন, এখানে কোনও রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হয় না। লাল কাঁঠাল গাছটি ভিয়েতনামি জাতের। সেটি এখানে হয় কিনা দেখার চেষ্টা করছি। এবছর কাঁঠাল ধরলেও সেটা ঝরে গেছে। ফলে লাল কাঁঠাল দেখতে এখনও এক বছর অপেক্ষা করতে হবে। তবে লাল কলা তিনি সফলভাবে উৎপাদন করতে পেরেছেন।ড. নজরুল ইসলাম

শুধু ফল না, রাইয়ান জৈব-কৃষি প্রকল্পে আধুনিক ও উন্নতমানের মুক্তা চাষের লক্ষ্যে এখন চলছে ঝিনুকের সার্জারি। গোলাপি ও হোয়াইট গোল্ড রঙয়ের মুক্তা পাওয়া যাবে ড. নজরুল ইসলামের রাইয়ান পার্ল হারবারে।ঝিনুকের সার্জারি

কেন চেনা রঙের বাইরে ভিন্ন রঙের ফল উৎপাদনে উৎসাহী হলেন প্রশ্নে নজরুল ইসলাম বলেন, বিদেশি জাতের ফল আমাদের দেশে উৎপাদন করা গেলে সাশ্রয়ী মূল্যে মানুষ তা পাবে। লাল কলায় আয়রন সাধারণ দেশি জাতের কলার চেয়ে বেশি থাকে। ফলে নারীদের আয়রনের অভাব দূর হবে। সেই আগ্রহের জায়গা থেকেই এসব চারা সংগ্রহ করেছি। আমার খামারটিকে ভিন্ন আঙ্গিকে তৈরির চেষ্টা করেছি। দেশে- বিদেশে যারা আগ্রহী হবেন তারা এখানে আসবেন। এই চারাগুলো বিস্তার লাভ করবে।