আটকে গেছে ৭ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী

সবাই বাড়ি ফিরলেও অপেক্ষায় আছে অভ্ররা

‘এমন যদি হতো, আমি পাখির মতো/ উড়ে উড়ে বেড়াই সারাক্ষণ...’ জনপ্রিয় বাংলা ব্যান্ড জলের গানের এই গানটি হোস্টেলে বসে গাইছে অভ্র, সঙ্গে গিটার বাজাচ্ছেন তার শিক্ষক। অভ্রর মায়ের ফেসবুক পোস্ট থেকে জানা যায়, এই লকডাউনে স্কুলের ভারতীয় শিক্ষার্থীরা যার যার ঘরে ফিরে গেলেও ফিরতে পারেনি অভ্রসহ সাত বাংলাদেশি শিক্ষার্থী। শঙ্কা আর অবসাদের মধ্যেও অভ্রদের রোজকার প্রচেষ্টা দেখে প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী মা অপেক্ষা করেন ছেলের ঘরে ফেরার। মা ওডিসি অ্যান্ড টেগোর ডান্স মুভমেন্ট সেন্টারের পরিচালক ও প্রশিক্ষক প্রমা অবন্তী।

অভ্রর মায়ের ফেসবুক পোস্টগানটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হতে শুরু করেছে, কেবল গান হিসেবে নয়। সাত জন শিক্ষার্থীর লকডাউনের জীবন, তাদের জন্য শিক্ষকদের দায়িত্বশীলতা আর মায়ের মন কেমন করা– সব মিলিয়ে মানুষ গানটি শুনছে।

ভয়াবহ করোনাকালে লকডাউনে আটকে যাওয়া ছেলের গান শেয়ার করে মা লিখেছেন, ‘অভ্র দার্জিলিং। ওই স্কুলের যারা ভারতীয় তারা যার যার বাড়িতে ফিরে গেছে। শুধু  আটকে আছে সাত জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী। শিক্ষক মহোদয়েরা অনেকে বাড়ি ফিরে গেছেন, কয়েকজন ওদের জন্য রয়ে গেছেন। তাদের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা। ক্লাসের অবসরে কখনও আড্ডা, কখনও গান করে সময় কাটছে এই শিশুদের। কখন ফিরবে তারা, সেই আশায় আমরা যেমন উৎকণ্ঠিত, তেমনি তারাও ফিরে আসার জন্য উদগ্রীব। কাল (১ মে) স্যারের সঙ্গে অভ্র বাংলাদেশের ব্যান্ড জলের গানের একটি জনপ্রিয় গানের সঙ্গে গানের মহড়ায় ব্যস্ত। প্রতিদিন এই মহড়া চলছে।’

গাইছে অভ্র, সঙ্গে গিটার বাজাচ্ছেন শিক্ষকআর মায়ের পোস্টে জলের গানের রাহুল আনন্দ শুভ কামনা জানালে অভ্র মায়ের মাধ্যমে লেখে:

‘আঙ্কেল আপনার প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা। সাড়া দিয়েছেন আমার বার্তায়। কৃতজ্ঞতাও অনেক কম কিছু। পুরো স্কুল এই লকডাউনে আপনাদের জয়গানে মুখর। জলের গানের এক অন্যরকম ভালোলাগা আছে। কত সাবলীল ভাষায় আপনারা গান করেন। মানুষের হৃদয় জয় করেন। জয় হোক আপনাদের। আজকের ভালো লাগাটা ব্যাখ্যা করার মতো নয়।

‘আমাদের জন্য আপনারা সবাই ভালো থাকবেন। গান কেমন হয়েছে, আপনার গুরুত্বপূর্ণ মতামত জানাবেন। অনেকটা অনুশীলন ছাড়া করা। আশা করি ভবিষ্যতে আমাদের পাশে থাকবেন। আদাব।’