কারও থুতনিতে, কেউবা নিশ্বাস নিতে খুলছেন মাস্ক

করোনা সংক্রমণ ঝুঁকি এড়াতে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে রাজধানীর বিভিন্ন শপিং মলে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। বৃহস্পতিবার (৬ মে) দুপুরে বেইলি রোড এলাকার বেশ কয়েকটি শপিং মল ও রেস্টুরেন্টে অভিযানে গিয়ে দেখা যায়, অনেকে মাস্ক মুখ থেকে নামিয়ে থুতনিতে লাগিয়ে রেখেছেন; কেউবা একটু নিশ্বাস নেওয়ার কথা বলে খুলে রেখেছেন। এ সময় বেশ কয়েকজন ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানার মুখে পড়েন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের নেতৃত্ব দেন ডিএমপির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সঞ্জীব দাস।

মার্কেটের প্রতিটি ফ্লোর ঘুরে দেখেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। তিনি প্রতিটি দোকানের ব্যবসায়ী-কর্মচারীদের নির্দেশনা দেন, যতটুকু সম্ভব স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য। শপিং মল ছাড়াও রাস্তার আশপাশে বেশ কয়েকটি খাবার দোকানেও অভিযান পরিচালনা করেন তাঁর নেতৃত্বাধীন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

এ সময় নাভানা বেইলি স্টার শপিং মলের ইনফান্সি শপের কর্মচারী দিদারকে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়। তিনি মাস্ক খুলে দোকানের ভেতরে অবস্থান করছিলেন। 

ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানসিরাজ ক্যাপিটাল সেন্টারে মান্নাত কালেকশনের এক কর্মচারী রুবিকে ৪০০ টাকা জরিমানা করা হয়। তিনি মাস্ক খুলে দোকানের ভেতর দাঁড়িয়ে ছিলেন এবং কথা বলছিলেন। জরিমানা দিয়ে রুবি বলেন, ‘নিশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল, সেজন্যই মাস্কটি খুলেছিলাম। তবে আমাদের সচেতন থাকা প্রয়োজন।’

অভিযানের সময় ৩০০ টাকা জরিমানা করা হয় ম্যাকয় শপের কর্মচারী তানজিল আহমেদকে। তিনিও মাস্ক ছাড়া দোকানের ভেতরে অবস্থান করছিলেন।

আরেক দোকানের কর্মচারী সোহেল রানা মাস্ক পরে ছিলেন না। তাকেও ৩০০ টাকা জরিমানা করা হয়।

মাস্ক থুতনিতে থাকায় তোইয়োবা বেগম নামে একজন ক্রেতাকে ৩০০ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা দিয়ে তিনি বলেন, ‘কাপড়গুলো দেখছিলাম। একটু আগেই মাস্কটা খুলেছিলাম। এরমধ্যেই ভ্রাম্যমাণ আদালতের নজরে এসেছি।’

মাস্ক না পরে ঘোরাফেরা করায় রাসেল আহমেদ ও সানজিদা খানমকে জরিমানা করা হয়। ৩০০ টাকা করে মোট ৬০০ টাকা জরিমানা গুনতে হয় তাদের।

সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখেই একটি দোকানে চলছে বেচাকেনাডিএমপির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সঞ্জীব দাস বলেন, ‘অধিকাংশ মানুষই মাস্ক পরছে। যারা পরছেন না তাদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। জরিমানা করা হচ্ছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের উপস্থিতি টের পেলে অনেকেই স্বাস্থ্যবিধি কিংবা মাস্ক পরতে সচেতন হয়ে ওঠে। ভ্রাম্যমাণ আদালত চলে গেলে এ বিষয়ে তারা অনেকটাই অবহেলা করে। জনগণ নিজে থেকে সচেতন না হলে সংক্রমণ ঝুঁকি কমানো সম্ভব নয়। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে আমরা মাঠে থাকবো। অভিযানে সাত জনকে দুই হাজার ৪০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।’ ভবিষ্যতে স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে কোনও গাফিলতি পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

এ সময় নিম্ন আয়ের মানুষ, রিকশাচালক, ফুটপাতের ভাসমান মানুষের মাঝে মাস্ক বিতরণ করা হয় ডিএমপির পক্ষ থেকে।