প্রস্তাবিত বাজেটে হতাশ পর্যটন খাতের ব্যবসায়ীরা

প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছে পর্যটন খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব)। বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা ও ট্যুর অপারেটরদের বাঁচানোর লক্ষ্যে পর্যটন কেন্দ্রগুলো স্বাস্থ্যবিধি ও এসওপি মেনে খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

বৃহস্পতিবার (১০ জুন) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে টোয়াবের সভাপতি মো. রাফেউজ্জামান এই দাবি জানান।

টোয়াবের সভাপতি ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের গভর্নিং বডি মেম্বার মো. রাফেউজ্জামান বলেন, বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী দেশের পর্যটন শিল্প বিকাশের কথা বলেছেন, কিন্তু খাতটিকে আর্থিক সংকট থেকে বের করে আনার বিষয়ে বাজেটে কোন প্রকার দিক নির্দেশনা খুঁজে পাইনি। গত বছর করোনা মাহমারির শুরু থেকেই ট্যুর অপারেটর ও পর্যটন শিল্পের সাথে জড়িত সবার জন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়ে আসছি, যা আজও সফলতার মুখ দেখেনি। এমনকি সেবা খাতের অন্তর্ভুক্ত হওয়া সত্ত্বেও কোন প্রকার ব্যাংক লোন গ্রহণ করতে পারেনি কেউ। প্রস্তাবিত বাজেটে এ খাতে চার হাজার ৩২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আগের বাজেটের চেয়ে ৩৪৪ কোটি টাকা বেশি হলেও আমি মনে করি, এই বরাদ্দ বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশের জন্য খুবই যৎসামান্য।

পর্যটনকে এখন বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম শিল্প উল্লেখ করে মো. রাফেউজ্জামান বলেন, বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। ২০১৯ সালের জিডিপিতে পর্যটন চার দশমিক চার শতাংশ যোগ করেছিল। মহামারির কারণে পর্যটন খাতকে গত বছর প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার লোকসান গুণতে হয়েছে। এ শিল্পে জড়িত প্রায় ৪০ লাখ মানুষ এখন মানবেতর জীবনযাপন করছে। অনেকেই হতাশ হয়ে অন্য ব্যবসায় চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পেশ করেন টোয়াবের পরিচালক (গণমাধ্যম ও প্রকাশনা) মোহাম্মদ সাহেদ উল্লাহ। সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পকে ধ্বংসের হাত রক্ষার জন্য টোয়াব ৫টি দাবি জানায়। দাবিগুলো হচ্ছে-
>> বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পকে করোনার প্রভাব থেকে দ্রুত উত্তোরণ ও ধ্বংসের হাত রক্ষার জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটন স্পটগুলো দ্রুত খুলে দেওয়া।
>> ট্যুর অপারেটরদের জন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা করা।
>> টোয়াব সদস্যদের জন্য পরবর্তী বছরের ট্রেড লাইসেন্স রিনিউয়াল ফি মওকুফ করা।
>> টোয়াব সদস্য, কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকাদানের ব্যবস্থা করা। এবং
>> পর্যটন শিল্পের যথাযথ উন্নয়ন ও বিকাশে পর্যটনের জন্য স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় করা।

সংবাদ সম্মেলনে ট্যুর অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজারের সভাপতি এম রেজাউল করিম রেজা, ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াক) সভাপতি রুমান ইমতিয়া তুষার, এভিয়েশন অ্যান্ড ট্যুরিজম জার্নালিস্ট ফোরামের (এটিজেএফবি) সভাপতি নাদিরা কিরণ ও সাধারণ সম্পাদক তানজিম আনোয়ার, ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবন (টোয়াস) সভাপতি মো. মইনুল ইসলাম জমাদ্দার, কটেজ ওনার্স এসোসিয়েশন অব সাজেক ভ্যালির উপদেষ্টা মো. মনিরুজ্জামান মাসুদ এবং সিলেট-শ্রীমঙ্গল পর্যটন এলাকার পর্যটন ব্যাবসায়ী প্রতিনিধি তানভিরুল আরাফিন লিংকন, টোয়াবের প্রথম সহ-সভাপতি শিবলুল আজম কোরেশী ও আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।