প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান ভাষানটেক ও কলমিলতা মার্কেটের ভুক্তভোগীরা

মিরপুরের ভাষানটেক পুনর্বাসন প্রকল্পের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ এবং বিজয় সরণির কলমিলতা মার্কেটের ভুক্তভোগীরা ক্ষতিপূরণ পাওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছে ভুক্তভোগীরা। রবিবার (২০ জুন) মিরপুর ১৪ নম্বরে ভাষানটেক পুনর্বাসন প্রকল্পের প্রধান সড়কে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এই হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ভাষানটেক এলাকার ভুক্তভোগী বস্তিনেত্রী নূরজাহান বেগম, আবুল হোসেন প্রমুখ। এসময় উপস্থিত ছিলেন ক্ষতিগ্রস্ত দুই শতাধিক মানুষ। মানববন্ধনে মূল বক্তব্য পাঠ করেন শহীদ আব্দুল কাদেরের সন্তান আলহাজ্ব আব্দুর রহিম।

মানববন্ধনে আব্দুর রহিমের সন্তান নূরতাজ আরা ঐশী ভিডিও বার্তায় বলেন,  আমার বার অ্যাট ল’ পড়তে যাওয়ার কথা ছিল যুক্তরাজ্যে। আমার বন্ধুবান্ধবের অনেকের শেষও হয়ে গেছে। আমাদের পড়ালেখা বন্ধ হয়ে গিয়েছে এবং আমাদের পরিবারের মৌলিক চাহিদা মেটাতেও আমরা ব্যর্থ হচ্ছি। অথচ আমরা ছিলাম শত বিঘা সম্পদের মালিক। আজ আমাদের মতো সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধা পরিবার সম্পদশালী থেকে হয়েছে সম্পদহারা। দুর্নীতিবাজ ঘুষখোরদের সম্পদ হয়েছে পাহাড়সম। বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী পালন হচ্ছে, আমাদেরও এই আনন্দ ভোগ করার কথা। স্বাধীনতার পর থেকেই বিজয় সরণির কলমিলতা বাজার অবৈধভাবে সন্ত্রাসী কায়দায় দখল করে। আর এই সম্পদ উদ্ধারে আমার বাবা ৫০ বছর ধরে রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রান্তে ধকল কেটে সর্বোচ্চ আদালতের রায় পেয়েছে। ২ মাসের মধ্যে আদালত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বললেও আজকের ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের একটি চক্র কারণে আমাদের ন্যায্য অধিকার পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।     

আব্দুর রহিম তার বক্তব্যে বলেন, প্রকল্প চলাকালীন সময় হঠাৎ সাত বছরের মাথায় অর্থাৎ ২০১০ সালে একদিন সন্ত্রাসী কায়দায় ভূমি মন্ত্রণালয় কিছু সন্ত্রাসীদের দ্বারা আমাদের এক কাপড়ে প্রকল্প থেকে বের করে দেওয়া হয়। আমাদের সেখানে অফিস ও বাড়ির যাবতীয় মালামাল, নগদ অর্থ এবং প্রকল্পের নির্মাণ সামগ্রী ও মেশিনারিজ তারা লুণ্ঠন করে। যাতে কিনা আমাদের আনুমানিক ৩০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয় এবং আমাদেরকে জোর করে তিন মাসের মধ্যে দেশছাড়া করে তারা। দেশত্যাগের দু'বছরের মাথায় ফিরে এলে আমাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয় কয়েক ডজন মিথ্যা মামলা দিয়ে। এসকল লুটতরাজ ও ঘটনার বারবার বিচার চেয়ে আজ ১১ বছর হয়ে গেলেও কোনও বিচার পাইনি।

আব্দুর রহিম প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, আমাদের প্রশ্ন আপনার কাছে ভাষানটেক প্রকল্পের এলাকার মানুষ কেমন আছে আপনি জানেন কি? স্থানীয় কিছু নেতা ও মাস্তান এবং ভূমি মন্ত্রণালয় আমাদের এবং সাধারণ জনতার ভাষানটেক প্রকল্পে বিনিয়োগ লুটেপুটে খাচ্ছে, আর বদনাম হচ্ছে আপনার সরকারের ও এনএসপিডিএল এর।