আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জাতীয় বাজেটে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ভাতা মাসিক ন্যূনতম পাঁচ হাজার টাকা করা, সরকারি-বেসরকারি কর্মসংস্থানসহ ১১ দফা দাবি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে স্মারকলিপি দিয়েছে ‘সংক্ষুব্ধ প্রতিবন্ধী নাগরিক সমাজ’।
রবিবার (২৬ মে) জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় মানববন্ধন শেষে সংগঠনের পক্ষ থেকে ৪ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সদস্য সচিব ইফতেখার মাহমুদসহ অন্যরা।
মানববন্ধনে ‘সংক্ষুব্ধ প্রতিবন্ধী নাগরিক সমাজ’ এর নেতারা বলেন, গত ১৯ বছরে প্রতিবন্ধীদের ভাতা বেড়েছে মাত্র ৬৫০ টাকা। ২০০৫ সালে ২০০ টাকার ভাতা ২০২৪ সালে ৮৫০ টাকা হয়েছে। গত বছরও আমরা প্রতিবন্ধীদের ভাতা ৫০০০ টাকা করার দাবি জানিয়েছি। কিন্তু আমাদের দাবির মূল্যায়ন করা হয়নি। দেশের সিংহভাগ প্রতিবন্ধী মানুষ যেখানে বেকার বা স্বল্প মজুরিতে কর্মরত এবং অনেকেই পরিবারের ওপর নির্ভরশীল সেখানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ভাতা তাদের জীবনের একটি বড় অবলম্বন। আমরা প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ভাতা ৫০০০ টাকার দাবি জানাচ্ছি, সরকারি চাকরিতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির কোটা পুনঃপ্রবর্তনসহ ১১ দফা দাবি পূরণের জন্য আহ্বান জানাই।
তাদের ১১ দফা দাবি হলো:
১। ২০২৪-২৫ সালে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ভাতা মাসিক ন্যূনতম ৫০০০ টাকা এবং শিক্ষা উপবৃত্তি মাসিক ২০০০ টাকা করা। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ভাতা ও উপবৃত্তি উভয়ই বরাদ্দ করা।
২। প্রতিবন্ধী মানুষের সরকারি চাকরিতে নিয়োগে বিশেষ নীতিমালা (কোটা) প্রণয়ন করা।
৩। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংকে ১০০০ কোটি টাকার প্রতিবন্ধী ব্যক্তি উদ্যোক্তা তহবিল গঠন করা।
৪। অনতিবিলম্বে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি উন্নয়ন অধিদফতরকে কার্যকর করা।
৫। বাংলা ইশারা ভাষা ইনস্টিটিউট প্রণয়ন, বাংলা ইশারা ভাষা যুক্ত সমন্বিত শিক্ষা কার্যক্রম চালু এবং বিদ্যালয়, আদালতসহ সব সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে বিনামূল্যে বাংলা ইশারা ভাষার দোভাষী সেবা নিশ্চিত করা।
৬। অবিলম্বে শিক্ষা ও চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য মর্যাদাকর অভিন্ন জাতীয় শ্রুতিলেখক নীতিমালা প্রণয়ন করা।
৭। নিরন্ন, শ্রমজীবী-মেহনতি এবং অটিস্টিকসহ সব গুরুতর প্রতিবন্ধী মানুষদের আত্মনির্ভরশীল বা ন্যূনতম জীবন ধারণের সুযোগ সৃষ্টি করতে আশ্রয়ণ প্রকল্পসহ সকল পূনর্বাসন কর্মসূচিতে ৬ শতাংশ কোটা নিশ্চিত করা।
৮। অটিজমসহ গুরুতর প্রতিবন্ধী মানুষের স্বাস্থ্য ও কেয়ারগিভার ভাতা চালু করা।
৯। প্রবেশগম্য অবকাঠামো এবং গণপরিবহন নিশ্চিতে সুনির্দিষ্ট অর্থ বরাদ্দ করা।
১০। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জাতীয় সংসদ, স্থানীয় থেকে জাতীয়, সব পর্যায়ে প্রতিবন্ধী মানুষের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা।
১১। মন্ত্রণালয়ভিত্তিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি সংবেদনশীল বাজেট প্রণয়ন করা।