ঈদ উপলক্ষে আত্মীয়ের বাসায় ঘুরতে বেরিয়ে গুনতে হচ্ছে জরিমানা

কোরবানি ঈদ উপলক্ষে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় শিথিল থাকার পর দেশব্যাপী ফের কঠোর বিধিনিষেধ শুরু হয়েছে আজ শুক্রবার থেকে। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। মিরপুরের ১০ নম্বরে একটি চেকপোস্ট বসিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সমন্বয়ে চলছে যৌথ অভিযান। শুক্রবার (২৩ জুলাই) বিকালের দিকে সেখানে বেশ কিছুক্ষণ অবস্থান করে দেখা গেছে, বেশিরভাগ মানুষই ‘যৌক্তিক কারণে’ বাইরে বের হলেও অনেকেই দিচ্ছেন নানান অজুহাত। কারণ যৌক্তিক মনে না হলে তাদের করা হচ্ছে জরিমানা।

চেকপোস্টটিতে জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়েছিলেন শুভ নামে এক যুবক। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি কর্তব্যরত ম্যাজিস্ট্রেটকে জানান, তিনি একজন মোবাইল ব্যবসায়ী। ইতোমধ্যে অনলাইনে ক্রেতার কাছে বিক্রি হওয়া একটি মোবাইল ফোন সংগ্রহ করতে মিরপুর ১ নম্বরে গিয়েছিলেন তিনি। তবে কঠোর বিধিনিষেধ চলাকালে এটি যৌক্তিক কারণ মনে হয়নি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের। এজন্য তাকে জরিমানা করা হয়।

এর কিছুক্ষণ পরে জরিমানার মুখে পড়েন মিরপুর ১ নম্বরের বাসিন্দা তরুণ হাসান। তিনি জিজ্ঞাসাবাদে জানান, পল্লবীতে তার বোনের বাসা। অন্যান্য সময় কাজ থাকে কাজের চাপে যাওয়া হয় না। ঈদের পরে আজ কাজকর্ম না থাকায় বোনকে দেখতে বেরিয়েছিলেন তিনি। এ সময় শুভ কিংবা হাসানের মতো অনেকেই বাইরে এসে নানা রকম অজুহাত দিচ্ছেন। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই আত্মীয়-স্বজনের বাসায় গিয়েছিলেন বা যাচ্ছেন বলে জানাচ্ছেন। করোনা মহামারির ভয়াবহ এই সময়ে কঠোর বিধিনিষেধ চলাকালে এমন ‘অযৌক্তিক’ কারণে বাইরে বের হওয়া এবং মাস্ক ব্যবহার না করার অপরাধে অনেককেই জরিমানা করা হয়।

5

সরকারি নির্দেশনা পালনের বিষয়ে পেট্রোল কমান্ডার ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ রাসেল প্রধান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, লকডাউনের প্রথম দিনে যারা রাস্তায় বের হয়েছেন এরমধ্যে যারা অতীব প্রয়োজন বের হয়েছেন তাদের আমরা যেতে দিচ্ছি। কয়েকজনকে পেয়েছি আমরা, যারা অপ্রয়োজনে বের হয়েছেন। যে শাস্তির বিধান রয়েছে সে অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। 
তবে আগের তুলনায় মানুষ অনেক সচেতন হচ্ছেন বলে জানালেন এই সেনা কর্মকর্তা। তিনি বলেন, অনেকেই সচেতনভাবেই চলাফেরা করছেন। মানুষ আগে থেকে সচেতন হয়েছেন। আমাদের (বাংলাদেশ সেনাবাহিনী) সহায়তায় জনগণও এগিয়ে এসেছেন।

ঢাকা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কে এম রফিকুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, কারণ ছাড়া কেউ রাস্তায় রয়েছে কিনা, যদি কেউ সঠিক কারণ দেখাতে না পারে তাদের আমরা জরিমানায় আওতায় নিয়ে এসেছি। প্রায় ৩০টি মামলা দেওয়া হয়েছে। যদি বাইরে বের হওয়ার ক্ষেত্রে চিকিৎসার বিষয় থাকে, তাদের আমরা যেতে দিচ্ছি। জরুরি বিষয় থাকলে তাদেরও  যেতে দিচ্ছি।

ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় কী ধরনের ‘কারণ’ জানাচ্ছেন বাইরে বের হওয়া মানুষেরা- এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনেকেই আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে যাচ্ছেন। বর্তমান সময়ে এ বিষয়টি খুবই অযৌক্তিক। সে কারণে তাদের আমরা মামলা দিচ্ছি। ৬০ ভাগ মানুষ যৌক্তিক কারণে এবং জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হয়েছেন। আর ৪০ ভাগ কোনও কারণ ছাড়াই বের হয়েছেন। অযৌক্তিক মনে হলে আমরা তাদের মামলা ও জরিমানার আওতায় নিয়ে আসছি।