প্রাভা হেলথের কার্যক্রম সাময়িক বন্ধের নির্দেশ

বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান প্রাভা হেলথের করোনা পরীক্ষাসহ যাবতীয় কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। সোমবার (২ আগস্ট) বাংলা ট্রিবিউনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার পরিচালক ডা. ফরিদ উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘তাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ থাকায় সাময়িক বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, প্রাভা হেলথের বিরুদ্ধে ভুল রিপোর্ট দেওয়া ছাড়াও আরও কয়েকটি অনিয়ম পাওয়া গেছে। কমিটির সদস্যরা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের সময় এই অনিয়মগুলো দেখতে পান।  

এর আগে প্রাভা হেলথ  করোনা টেস্টের ভুল রিপোর্ট দিয়েছে— এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। আর এজন্য একটি তদন্ত টিম গঠন করে অধিদফতর। সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদের ছেলে মাহফুজ শফিকের অভিযোগ আমলে নিয়ে এই তদন্ত শুরু করে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

ভুক্তভোগী মাহফুজ শফিক তখন জানান, গত ৭ জুলাই বিকালে তার স্ত্রী ফারজানা রহমান, দুই মেয়ে বায়না শফিক এবং জেইন শফিকের করোনা পরীক্ষার নমুনা দেওয়া হয়। কারণ, তার দুই দিন পর  ৯ জুলাই তাদের যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার কথা ছিল। বিদেশগামী যাত্রীদের করোনা পরীক্ষা বাধ্যতামূলক হওয়ায় তারা এই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নমুনা দেন। ৭ জুলাই রাতে তার স্ত্রীর ফোনে এসএমএস আসে তিনি করোনায় আক্রান্ত। কিছুক্ষণ পর পৃথক এসএমএসে তাদের দুই মেয়েও পজিটিভ বলে জানানো হয় প্রাভা হেলথের পক্ষ থেকে।

কিন্তু মেয়েদের পজিটিভ আসার বিষয়টি একটু সন্দেহ হলে প্রাভার সঙ্গে যোগাযোগ করেন মাহফুজ শফিক। তখন  তারা জানায়, তাদের প্রতিষ্ঠানের মেশিন একদম নতুন ও অত্যাধুনিক, তাই ভুল হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই।

মাহফুজ শফিকের  বাবা শফিক আহমেদের বয়স ৮৫ বছর এবং মা ডাকসুর সাবেক ভিপি অধ্যাপক মাহফুজা খানমের বয়স ৭৬ বছর। তারা সবাই একসঙ্গে থাকেন বলে তিনি তাদের নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েন। একই সঙ্গে তিনি নিজেও আক্রান্ত কিনা সেটা জানতে  বেসরকারি গ্রিন লাইফ হাসপাতালে নিজের নমুনা দেন।  সেখানে তার পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ এলে তিনি প্রাভা হেলথের রিপোর্ট নিয়ে অভিযোগ করেন।

এরপর মাহফুজ শফিক  গত ৮ জুলাই রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)-এ পরিবারের সবাইসহ মোট ২০ জনের নমুনা দেন। ৯ জুলাই তারা সবাই নেগেটিভ বলে জানানো হয় আইইডিসিআর থেকে।

মাহফুজ শফিক বলেন, ‘এরপরই একজন ভুক্তভোগী হিসেবে, যতটুকু অন্যায় হয়েছে আমার প্রতি, সেটা আমি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, পুলিশের মহাপরিদর্শক এবং র‌্যাবের ডিজি, সবাইকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘প্রাভার ভুল রিপোর্টের কারণে ঝড় বয়ে গেছে পুরো পরিবারের ওপর দিয়ে। স্ত্রী এবং সন্তানদের ফ্লাইট বাতিল হয়েছে, এটা আর কারও সঙ্গে হোক, চাই না।’