রূপগঞ্জ ট্রাজেডি: ঢামেকে মরদেহ নিতে স্বজনরা

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া আরও ২১ মরদেহ নিতে শনিবার (৭ আগস্ট) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে জড় হচ্ছেন স্বজনরা। সকাল থেকে মর্গের সামনে জড়ো হতে থাকেন তারা।

২১ জনের মধ্যে যাদের নাম রয়েছে তারা হচ্ছেন- মোসা. মাহমুদা আক্তার, সান্তা মনি, মাহবুবুর রহমান, জিহাদ রানা, রহিমা আক্তার, মিনা খাতুন, মো. নোমান, আমেনা আক্তার, মোসা. রহিমা, রাবেয়া আক্তার, মো. আকাশ মিয়া, মো. নাজমুল হোসেন, কল্পনা রানী বর্মন, স্বপন মিয়া, শেফালী রানী সরকার, মোসা. অমৃতা বেগম, মো. শামীম, সেলিনা আক্তার, তাসলিমা আক্তার, ফাকিমা আক্তার, মো. হাসনাইন।

হাসেম ফুডস লিমিটেডের ওই কারখানায় আগুনের ঘটনায় দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া ৪৮ মরদেহের মধ্যে ডিএনএ প্রোফাইলের মাধ্যমে ৪৫ শ্রমিকের পরিচয় পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে বুধবার (৪ আগস্ট) ২৪ জনের মরদেহ নিজ নিজ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে সিআইডি। বাকি ২১ মরদেহ নেওয়ার জন্য স্বজনরা শনিবার মর্গে আসচ্ছেন। তারা অপেক্ষায় রয়েছেন কখন পাবেন প্রিয়জনের মরদেহ।

কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার বাসিন্দা মঞ্জিল মিয়া ও তার মেয়ে আসেন সকাল সোয়া আটায়। মঞ্জিল মিয়া জানান, তার স্ত্রী মিনা খাতুনের (৪৩) মরদেহ রয়েছে এখানে। শুক্রবার সংবাদ পেয়ে রাতে তারা ঘুমাননি। ছুটে এসেছেন মর্গে। এখন শুধু অপেক্ষা, কখন পাবেন মরদেহ।

এর আগে আসেন ভোলা জেলার দক্ষিণ আইচা উপজেলার বাসিন্দা সেখানকার মসজিদের ইমাম ফখরুল ইসলাম। তিনি জানান, তার ছেলে শামীমের (১৮) মরদেহ আছে এখানে। ছেলের মরদেহ নিতে এসেছেন তিনি।

তিনি আরও জানান, তার ছেলে গ্রামে মাদ্রাসায় পড়াশুনা করতো। লকডাউনে তাদের মাদ্রাসা বন্ধ থাকায় পরিবারের অভাবের কারণে সে পরিচিতদের মাধ্যমে কাজ নিয়েছিল চট্টগ্রামে বনফুল সেমাইয়ের কারখানায়। সেখান থেকে রোজার ঈদের আগে একটু বেশি বেতনে চাকরি নিয়েছে হাসেম ফুডস কারখানায়। সেটা তিনি জানতেন না। আগুনের পর দিন প্রতিবেশী সহকর্মীদের স্বজনদের কাছে বিষয়টি জানতে পারেন। পরে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার কোনও সংবাদ পাননি। পরে সিআইডি’র কাছে রক্ত দিয়ে গিয়েছিলেন। শুক্রবার জানতে পেরেছেন, ছেলের মরদেহ পাওয়া গেছে। তাই চলে এসেছেন। এখন বসে আছেন, কখন মরদেহ পাবেন। শামীমরা দুই ভাই দুই বোন, সে ছিল তৃতীয়।

 শুধু শামীম বা মিনা খাতুনের পরিবারের স্বজনরা নয়, অনেকের স্বজনরাই ছুটে আসছেন প্রিয়জনের মরদেহ নিতে।