পাশাপাশি বসলে স্বাস্থ্যবিধি মানা হবে?

করোনা সংক্রমণ রোধে চলমান কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। যা ১১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী সড়ক, রেল ও নৌপথে আসনসংখ্যার সমপরিমাণ যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন চলাচল করতে পারবে। মোট পরিবহন সংখ্যার অর্ধেক চালু করার নির্দেশনা থাকলেও যাত্রীরা বসতে পারবে পাশাপাশি।

গণপরিবহনে পাশাপাশি যাত্রী নিয়ে কী করে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা হবে প্রশ্নে জনস্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, ‘এটা অসম্ভব, অবাস্তব এবং অলীক কল্পনা। কোনোভাবেই স্বাস্থ্যবিধি মানা হবে না। বরং প্রজ্ঞাপনের স্বাস্থ্যবিধি শব্দটাই এখানে খেলো গেলো’।

এক সিট বাদ দিয়ে সব আসনে যাত্রী থাকা মানেই ঝুঁকি থাকছে। এমন মন্তব্য করেছেন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)-এর উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন।

‘যে পরিস্থিতিতে বিধিনিষেধ চলমান রাখার কথা, সেখানে আমরা সব খুলে দিতে বাধ্য হচ্ছি।’

দেশের খেটেখাওয়া মানুষকে লকডাউনে সহযোগিতা করার দরকার ছিল। কিন্তু সেটা করা হয়নি। ভয়-ভীতি না দেখিয়ে সহযোগিতামূলক পরিবেশ তৈরির কথা বারবার বলে এসেছেন এই মহামারি বিশেষজ্ঞ।

ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, ‘রাষ্ট্রীয়ভাবে বা সরকারিভাবে মানুষকে সাহায্য করতে পারছি না। সেই সক্ষমতা আমাদের নেই। আমাদের মতো দেশের পক্ষে সবকিছু বন্ধ রাখাও সম্ভব নয়। কিন্তু অবশ্যই এটা ক্ষতিকর হবে।’

স্বাস্থ্য অধিদফতরের গঠিত পাবলিক হেলথ অ্যাডভাইজারি কমিটির সদস্য জনস্বাস্থ্যবিদ আবু জামিল ফয়সাল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গত জুলাই থেকে যা দেখছি, কঠোর বিধিনিষেধ হলো, আবার ঈদের জন্য সব ‍খুলে দেওয়া হলো। এরপর আবার লকডাউন। কিন্তু সেটা আদৌ লকডাউন ছিল কিনা সেটা নিয়েও আছে প্রশ্ন।’

‘এরকমই থাকবে, এরকমই সংক্রমণ হবে, এরকমই মারা যাবে। এখন আমাদের এসব দিকে খেয়াল নেই।’ এমন মন্তব্য করে আবু জামিল ফয়সাল বলেন, ‘এখন খেয়াল পুরোটা টিকার দিকে। বাকি সব বাদ দেওয়া হয়েছে। এতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।’

উল্লেখ্য, রবিবার (৮ আগস্ট) প্রজ্ঞাপন জারির দিনই দেশে করোনায় সরকারি হিসাবে শনাক্ত সাড়ে ১৩ লাখ ছাড়িয়েছে।