চাকরিজীবী ছেলে-মেয়ের মধ্যে বিয়ে বন্ধে আইন চান এমপি বাবলু

ছেলে ও মেয়ে উভয়েই চাকরিজীবী হলে তাদের মধ্যে বিয়ে বন্ধ করতে আইন প্রণয়নের প্রস্তাব দিয়েছেন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবলু। ‘বেকারত্ব কমানো ও গৃহকর্মীদের দ্বারা শিশু নির্যাতন বন্ধে’ এই আইন সুফল বয়ে আনবে বলে মনে করেন এই আইন প্রণেতা। অবশ্য আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এ ধরনের আইনকে অসাংবিধানিক উল্লেখ করে বলেছেন, ‘বাক স্বাধীনতার সুযোগ নিয়ে যা কিছু তাই বলা যেতে পারে। কিন্তু জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমি যা খুশি তাই গ্রহণ করতে পারবো না।’

শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদে ‘জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ বিল-২০২১’ এর সংশোধনী প্রস্তাবের ওপর আলোচনাকালে অপ্রাঙ্গিকভাবে সংসদ সদস্য বাবলু প্রস্তাবটি করেন।

বগুড়া-৭ আসনের স্বতন্ত্র এই এমপি বলেন, করোনার কারণে দেশের ৪ কোটি জনগোষ্ঠী বেকার হয়েছে। আমাদের দেশে প্রচলিত সামাজিক রেওয়াজ আছে। চাকরিজীবী পুরুষরা চাকরিজীবী নারীকে বিয়ে করতে চান, আবার চাকরিজীবী নারীরাও চাকরিজীবী পুরুষকে বিয়ে করতে চান; এতে কিন্তু বেকার সমস্যার সমাধান হয় না।

তিনি বলেন, এখানে আইনমন্ত্রী আছেন, ওনাকে নিবেদন করবো, উনি সুবিধাজনকভাবে এমন একটি আইন করবেন- যাতে করে কোনও চাকরিজীবী নারী কোনও চাকরিজীবী পুরুষকে বিয়ে করতে পারবেন না এবং কোনও চাকরিজীবী পুরুষ কোন চাকরিজীবী নারীকে বিয়ে করতে পারবেন না। তাহলে আমাদের বেকার সমস্যাটা অনেকাংশে লাঘব হবে। এই প্রস্তাবটি আমলে নিয়ে আইন প্রণয়ন করলে দেশের ৪ কোটি বেকারের সংখ্যা কিছুটা হলেও কমবে।

প্রস্তাবের পেছনে যুক্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, আমার প্রস্তাবের পেছনে আরও একটি কারণ আছে। যখন চাকরিজীবী দম্পত্তি অফিসে যান তাদের শিশু সন্তানরা গৃহকর্মীদের দ্বারা দারুণভাবে নির্যাতিত হয়।

এমপি বাবলুর এই প্রস্তাব উত্থাপনের সময় সংসদে হাসির রোল পড়ে যায়। ওই প্রস্তাবের জবাব দিতে গিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, সংসদ সদস্য বললেন পুরুষ চাকরি করলে চাকরিজীবী মেয়ের সাথে তাকে বিয়ে দেওয়া যাবে না। এ রকম প্রস্তাব নিয়ে আমি এখান থেকে দু’কদমও হাঁটতে পারবো না। এটা অসাংবিধানিক প্রস্তাব। কীভাবে এই প্রস্তাব এখানে এলো, বুঝতে পারলাম না। আমাদের বাকস্বাধীনতা রয়েছে। উনি যা খুশি তাই বলতে পারেন। নিশ্চয় উনি যা খুশি তাই এর মধ্যে আছেন। কিন্তু আমি যা খুশি তাই গ্রহণ করতে পারবো না। কারণ আমি জনগণের প্রতিনিধি।