উপকূলীয় এলাকার সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর নির্দেশ কৃষিমন্ত্রীর

উপকূলের বিশাল এলাকায় কৃষি উৎপাদনের সম্ভাবনাকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানীদেরকে নির্দেশনা দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।

তিনি বলেন, ‘দেশে খাদ্যের চাহিদা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। একইসঙ্গে বাড়ছে পুষ্টিসম্মত ও নিরাপদ খাদ্যের চাহিদা। এসব খাদ্যের জোগান অব্যাহত রাখতে হলে উৎপাদন আরও বাড়াতে হবে। আর উৎপাদন বাড়ানোর সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনা রয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকায়। এ সম্ভাবনাকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে সবাইকে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করতে হবে।’

রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে যশোর সার্কিট হাউজে যশোর ও খুলনা অঞ্চলের কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘আগে বছরে যেখানে একটি ফসল হতো, সেখানে এখন সীম চাষ, অসময়ের তরমুজ, মরিচ প্রভৃতি চাষ হচ্ছে। ঘেরে মাছ চাষের সঙ্গে এসব ফসলের চাষ— এটিই কৃষির অভাবনীয় সাফল্য।’

ড. রাজ্জাক আরও  বলেন, ‘কৃষিতে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি (প্রিসিসন এগ্রিকালচার) ও রোবট ব্যবহারের মাধ্যমে আগামী দিনের খাদ্য উৎপাদনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।’

সভায় কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানীরা দক্ষিণাঞ্চলের কৃষিতে সমস্যা, সম্ভাবনা ও পরিকল্পনা তুলে ধরেন। এতে উঠে আসে ভবদহের দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতার সমস্যার কথাও। জলাবদ্ধতা নিরসনে বিএডিসির উদ্যোগের প্রশংসা করে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, ‘গতবছর বিএডিসি পাম্পের সাহায্যে পানি নিষ্কাশনে কাজ করেছে। এর ফলে মানুষের বাড়ি-ঘরে পানি উঠতে পারেনি।’

ভবদহের জলাবদ্ধতা নিরসনে বিএডিসি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কাজ করবে বলে এ সময় জানান কৃষিমন্ত্রী। সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তফতরের মহাপরিচালক মো. আসাদুল্লাহর সভাপতিত্বে অতিরিক্ত সচিব ওয়াহিদা আক্তার, বিএডিসির চেয়ারম্যান ড. অমিতাভ সরকার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

সাতক্ষীরায় ৮৪ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষ

এর আগে বিকালে কৃষিমন্ত্রী সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার কামারালী ও বাকরা গ্রামে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষের মাঠ পরিদর্শন ও কৃষকদের সঙ্গে  মতবিনিময় করেন। মাত্র ২৭ টাকা কেজিতে টমেটো বিক্রি করছে জানিয়ে কৃষকেরা এ সময় আরও কিছু সমস্যার কথা তুলে ধরেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘টমেটোর ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে ভারত থেকে আমদানি বন্ধ করে দেওয়া হবে।’ এছাড়া পরমাণু শক্তি ব্যবহার করে টমেটোসহ শাকসবজি ফলমূলের সংরক্ষণকাল বাড়াতে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী। 

ড. রাজ্জাক আরও বলেন, ‘সাতক্ষীরায় এ বছর ৮৪ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ হয়েছে। এটিকে ৭০০ হেক্টরে উন্নীত করা হবে। এজন্য কৃষকদেরকে বীজ, সারসহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করা হবে।’