জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠনের দাবি

সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন এবং জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন ও বৈষম্য বিলোপ আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু সংগঠনসমূহের ঐক্যমোর্চা। বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করা হয়।

সম্মেলনে ঐকমোর্চা থেকে বলা হয়, স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে অর্থনীতিতে এবং জীবন ব্যবস্থায় সাফল্য অর্জিত হলেও দেশের জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগণের জীবনে মানবাধিকার, মৌলিক স্বাধীনতা, নিরাপত্তা, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় আশানুরূপ অগ্রগতি সাধিত হয়নি।

বক্তারা বলেন, সংখ্যালঘু জনগণকে দেশে দেশে জাতীয় রাজনীতির নানা হিসাব-নিকাশের কারণে কঠিন সংকট মোকাবিলা করে বেঁচে থাকতে হয়। এ কারণেই জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ১৯৯২ সালে একটি মাইনোরিটি ডিক্লারেশন গ্রহণ করে। এই ঘোষণাপত্রে বলা হয়, দেশে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা বিধান, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন, নাগরিক অধিকার, মৌলিক স্বাধীনতা ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে রাষ্ট্রকে মূল ভূমিকা পালন করতে হবে।

ঐক্য থেকে অভিযোগ করা হয়, দেশের স্বাভাবিক সময়ে তো বটেই, আজকের করোনা অতিমারি পরিস্থিতিতেও ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু ও আদিবাসীদের বাড়িঘরে হামলা, তাদের জমিজমা জবর দখলের অপচেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা ঘটনাবলির সঙ্গে জড়িত দুষ্কৃতকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানাই।

সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ঐক্য থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করার ঘোষণা দেওয়া হয়। 

আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহারের প্রতিশ্রুতিগুলো উল্লেখ করে ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু সংগঠনসমূহের ঐক্যমোর্চা থেকে সরকারের কাছে নিম্নক্ত দাবিগুলো জানানো হয়—

১. অনতিবিলম্বে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করতে হবে।

২. অনতিবিলম্বে জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন ও বৈষম্য বিলোপ আইন প্রণয়ন করতে হবে।

৩. অনতিবিলম্বে অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।

৪. পার্বত্য শান্তিচুক্তি ও পার্বত্য ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে। এবং

৫. সমতলের সংখ্যালঘু জাতিসত্তাসমূহের ভূমি রক্ষায় স্বতন্ত্র ভূমি কমিশন গঠন এবং রাষ্ট্রীয় প্রজাস্বত্ব আইনের ৯৭ ধারা কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের নির্দেশ জারি করতে হবে।

সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রধান সমন্বয়ক রানা দাশগুপ্ত, ঊষাতন তালুকদার, মিলন কান্তি দত্ত, জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা প্রমুখ।