লায়লা হিজড়া স্মৃতিপদক পেলেন ময়ূরী

ট্রান্সজেন্ডার ও হিজড়া জনগোষ্ঠীর আত্ম-স্বীকৃতি, অধিকার রক্ষা এবং জীবনমান উন্নয়নে গুরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য লায়লা হিজড়া স্মৃতিপদক-২০২১ পেলেন আরিফা ইয়াসমিন ময়ূরী। বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর বেইলি রোডে বাংলাদেশ গার্লস গাইড অ্যাসোসিয়েশনের মিলনায়তনে তার হাতে এই সম্মান তুলে দেন সমাজসেবা অধিদফতরের মহাপরিচালক শেখ রফিকুল ইসলাম। 

ময়ূরী একজন সফল উদ্যোক্তা ও উন্নয়নকর্মী। জামালপুরে সিঁড়ি সমাজ কল্যাণ সংস্থা নামে নিজের সংগঠনের মাধ্যমে ট্রান্সজেন্ডার ও হিজড়া জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষা ও জীবনমান উন্নয়নে কাজ করেন তিনি। একইসঙ্গে এই জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের জন্য হস্ত ও বস্ত্র কুঠির শিল্প গড়ে তুলেছেন ময়ূরী, যেখানে বর্তমানে তিন শতাধিক ট্রান্সজেন্ডার ও হিজড়া কর্মী কাজ করছেন।

সমাজসেবা অধিদফতরের মহাপরিচালকের মন্তব্য, ‘পারিবারিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা গেলে হিজড়াদের জীবনমান উন্নয়ন দ্রুত হবে। এজন্য সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী হিজড়াদের সম্পত্তির অধিকার নিশ্চিত করেছেন, লিঙ্গ পরিচয়ও দিয়েছেন। হিজড়া সন্তানরা যেন পরিবারের সঙ্গেই থাকতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে আমাদের।’

অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাসের ফরেন সার্ভিস অফিসার অব দ্য ডিপার্টমেন্ট অব স্টেট, বাংলাদেশেরর ড্যানিজে বাকম্যান এবং পুলিশ সদর দফতরের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ মোতাজ্জার হোসেন। স্মৃতিপদক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বন্ধু’র চেয়ারপারসন ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আনিসুল ইসলাম হিরু। এই আয়োজনে বন্ধুর সঙ্গে ছিল সুস্থ জীবন, পদ্মকুঁড়ি হিজড়া সংঘ এবং ট্রান্সএন্ড।

বাংলাদেশের ট্রান্সজেন্ডার ও হিজড়া জনগোষ্ঠীর স্বীকৃতি ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে বিশেষ করে এইচআইভি/এইডস প্রতিরোধে নব্বই দশক থেকে আমৃত্যু সংগ্রাম করে গেছেন লায়লা হিজড়া। ২০০৮ সালে মারা যান তিনি। ট্রান্সজেন্ডার ডে অব রিমেমাব্রেন্স উপলক্ষে ‘লায়লা হিজড়া স্মৃতিপদক ২০২১’ প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বন্ধু সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি। দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে দেশের ট্রান্সজেন্ডার এবং হিজড়া জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষা, জীবনমানের উন্নয়ন ও স্বাস্থ্যসেবায় কাজ করে যাচ্ছে সংগঠনটি। লায়লা হিজড়ার অবদানের প্রতি সম্মান জানাতে গত বছর থেকে এই স্মৃতিপদক প্রবর্তন করেছে তারা।