শহরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে তুরস্ক। নানা প্রযুক্তি আর উদ্ভাবনের মাধ্যমে দেশটির সবকটি শহর পরিচ্ছন্ন রাখা হয়। নগর কর্তৃপক্ষের অগ্রাধিকার তালিকায়ও রয়েছে নাগরিকদের জন্য এ সেবাটি। শহরগুলোর কোথাও ময়লা পাওয়া যাবে না। নেই কোনও ব্যানার বা পোস্টারও। দেশটির প্রেসিডেন্ট বা কোনও রাজনীতিবিদের ছবি যুক্ত বিল বোর্ড দেখা যায় না। কোথাও সভা-সমাবেশ হলে তার পরপরই নামিয়ে ফেলা হয় সব পোস্টার-ফেস্টুন। দেশটির বিভিন্ন শহর ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
আঙ্কারা নগর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা বিশেষ পদ্ধতিতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করে থাকে। তাদের অধিকাংশ বর্জ্যঘর মাটির নিচে। যে কয়টি ওপরে রয়েছে সেগুলোও পরিবেশবান্ধব। ময়লার ডাম্পিং স্টেশন ও বহনকারী গাড়িগুলোও অত্যাধুনিক। পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের স্বাস্থ্যসুরক্ষা নিশ্চিত করেই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করা হয়। যে কারণে বছরের সবসময় পুরো শহর পরিচ্ছন্ন থাকে।
আঙ্কারার ডেপুটি মেয়র সেলিম সিরপান লৌ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, নাগরিক সেবাগুলোর মধ্যে আমরা বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে থাকি। এজন্য যত ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করা দরকার, আমরা সেগুলো ব্যবহার ও উদ্ভাবনের জন্য কাজ করি। এ ছাড়া বর্জ্য ঘরগুলো মাটির নিচে রাখা হয়েছে। সব ধরনের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই আমরা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করে থাকি। এ জন্য ঢাকার মেয়র আমাদের সহায়তা চেয়েছেন। আমরা এক সঙ্গে কাজ করবো।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গত ১৩ ডিসেম্বর সোমবার আঙ্কারায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আবক্ষ ভাস্কর্য ও একটি পার্ক উদ্বোধন করা হয়। এ জন্য একটি দুটি সমাবেশের আয়োজন করে নগর কর্তৃপক্ষ। তাতে দুদেশের পতাকাসহ বেশকিছু প্ল্যাকার্ড লাগানো হয়। কিন্তু সমাবেশ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সবকিছু খুলে নেয় নগর কর্তৃপক্ষ।
জানতে চাইলে তুরস্কের সফররত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমরা তুরস্কের সবকটি শহরকে পরিচ্ছন্ন দেখেছি। তাদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি অনেক আধুনিক। অধিকাংশ এসটিএস মাটির নিচে অবস্থিত। এই অভিজ্ঞতা আমরা ঢাকায় কাজে লাগাবো। এজন্য দুই সিটি করপোরেশন সিস্টার কনসার্ন হিসেবে কাজ করার জন্য সম্মত হয়েছি।
তিনি আরও বলেন, তুরস্কের শহরগুলো কীভাবে মাটির নিচে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ঘর নির্মাণ করেছে আমরা সে অভিজ্ঞতা নিয়েছি। এরই মধ্যে ঢাকা শহরেও চারটি এসটিএস মাটির নিচে স্থাপনের জন্য বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরিকে (বিএমটিএফ) এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সমাজ বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলে বস্তুগত সংস্কৃতি। আমরা অবস্তুগত সংস্কৃতিতে এগিয়ে গেলেও বস্তুগত সংস্কৃতিতে পিছিয়ে রয়েছি। দুটি সমানতালে চলতে হবে। এই বর্জ্যঘরগুলো কীভাবে মানুষ ব্যবহার করবে সে বিষয়ে জানা থাকতে হবে। এজন্য ব্যাপক প্রচারণা করতে হবে। প্রকল্পটি যাতে আগের প্রকল্পগুলোর মতো না হয়।