গেজেটেড মর্যাদা কার্যকরে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা

দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড মর্যাদা বাস্তবায়নে সরকারি অফিস আদেশ জারি করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা। শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর আবেদন দিয়ে তারা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান। 

টুঙ্গিপড়ায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মাজার জিয়ারত শেষে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে আবেদন জমা দেন প্রধান শিক্ষকরা। বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে এই আবেদন জানানো হয়। কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রিয়াজ পারভেজ আবেদনে সই করেন। রিয়াজ পারভেজ, সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক অরুণ কুমার দাসসহ অন্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

গত ৯ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেডে বেতন উন্নীতকরণসহ দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড পদমর্যাদা দিয়ে রায় ঘোষণা করেন। রায় অনুযায়ী সরকারি আদেশ বা জিও জারির জন্য প্রধানমন্ত্রী বরাবর আবেদন জানান শিক্ষকরা।

আবেদনে শিক্ষকরা জানান, ২০১৪ সালের ৯ মার্চ এক যুগান্তকারী ঘোষণার মাধ্যমে প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তার পদমর্যাদায় উন্নীত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধান শিক্ষকদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে শিক্ষকদের পক্ষে আবেদনে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড পদমর্যাদা ও পদমর্যাদা অনুযায়ী দশম গ্রেড গত সাত বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি। মন্ত্রণালয় কৌশলে প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল নির্ধারণ করে ১১তম গ্রেড (প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত) ও ১২তম গ্রেড (প্রশিক্ষণবিহীন)। অথচ নন-ক্যাডার দ্বিতীয় শ্রেণির পদে অন্য মন্ত্রণালয় বা বিভাগে দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তারা দশম গ্রেডে বেতন পান।

প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড পদমর্যাদা সম্পর্কিত ২০১৪ সালের ৯ মার্চের প্রজ্ঞাপনে ভুলবশত ‘গেজেটেড’ শব্দটি না থাকায় ২০১৫ সালের ১৮ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান শিক্ষকদের গেজেটেড পদমর্যাদা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

আবেদনে আরও জানানো হয়, প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড পদমর্যাদা ও পদমর্যাদা অনুযায়ী দশম গ্রেড কার্যকর না হওয়ায় ২০১৮ সালে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও প্রশিক্ষণবিহীন উভয় প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল দশম গ্রেডসহ গেজেটেড পদমর্যাদা ২০১৪ সালের ৯ মার্চ থেকে কার্যকর করতে ২০১৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি এক রায়ে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। রায়ে দশম গ্রেডসহ দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড প্রধান শিক্ষকদের নাম উল্লেখ করে গেজেট নোটিফিকেশন জারি করা এবং দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড পদমর্যাদা উন্নীতের দিন থেকে চার বছর পূর্তিতে সিলেকশন গ্রেড এবং ৮ বছর ও ১২ বছর পূর্তিতে প্রথম ও দ্বিতীয় টাইমস্কেল দেওয়ারও নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২ ডিসেম্বর আপিল আবেদন করে সরকার পক্ষ। আপিল বিভাগ আবেদনের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে আপিল খারিজ করে হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন।