আসনের চেয়ে বেশি যাত্রী নিয়েই চলছে বাস

করোনার নতুন ধাক্কা সামলাতে সরকার প্রথমে ভাড়া না বাড়িয়েই লঞ্চ, ট্রেন ও বাসে অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের নির্দেশনা দেয়। পরে মালিক-শ্রমিকদের আপত্তির পরিপ্রেক্ষিতে তা থেকে সরে এসে ‘যত সিট তত যাত্রী’ নিয়ে গণপরিবহন চলাচলের নির্দেশনা দেওয়া হয়। এতে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানারও ঘোষণা দেয় মালিকপক্ষ। ঘোষণার দুদিন পরেও বিধিনিষেধ পুরোপুরি কার্যকর হয়নি গণপরিবহনে। শনিবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে সরকারি ছুটির দিনে সড়কে যাত্রীর চাপ কিছুটা কম। এতে কিছু বাসে ‘যত সিট তত যাত্রী’ নিয়ম পরিপালন হলেও অনেক বাসেই তা মানা হচ্ছে না। কোথাও কোথাও দাঁড়িয়েও যাত্রী পরিবহন করতে দেখা গেছে।

সকালে নগরীর সায়েদবাদ, যাত্রবাড়ি, মালিবাগ, মৌচাক, ফকিরাপুল, পল্টন, দৈনিক বাংলা, গুলিস্তান, শাহবাগ, ফার্মগেটসহ বিভিন্ন এলাকায় এমন চিত্র দেখা গেছে। এসময় প্রায় প্রতিটি পরিবহনে আসনের শতভাগ যাত্রীর পাশাপাশি দাঁড়িয়েও অনেককেই করতে দেখা গেছে। অধিকাংশ যাত্রীই মুখে ছিল না মাস্ক। চালক থেকে শুরু করে হেলপারদের মুখেও মাস্ক দেখা যায়নি। হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতেও দেখা যায়নি কোনও গণপরিবহনে।

লাব্বাইক পরিবহনের হেলপার আব্বাসউদ্দীন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, সব আসনে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। মালিক সমিতির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে সরকার সব আসনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাত্রী পরিবহনের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। তবে সব আসন ভর্তি হয়ে যাওয়ার পরেও অনেক যাত্রী জোর করে বাসে উঠে যায়। তখন তাদের আমরা নামাতে পারি না।

তবে নিজের ওপর দোষ নিতে রাজি নন বাসে দাঁড়িয়ে চলাচলকারী এক যাত্রী, বাস থেকেই তিনি প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, সকালে অফিস থাকে। এমনি রাজধানীতে গণপরিবহনের সংকট, তার ওপর এই বিধিনিষেধ। অফিসে দেরি হলে জরিমানা গুণবে কে? সরকার আগে অফিসের সময় শিথিল করুক, তারপরও এ বিষয়ে ভাবা যাবে।

গত ১৩ জানুয়ারি বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শতভাগ যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন চালাবে মালিক সমিতি। সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ জানান, শতভাগ আসনে যাত্রী পরিবহন নিয়ে মন্ত্রণালয়ের সাথে মৌখিক নির্দেশনা রয়েছে। সরকারের সে নির্দেশনা আমরা সকল মালিকপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছি।

এদিকে আজ থেকে ধারণক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে ট্রেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে গত বুধবার থেকে ট্রেনে মোট আসনসংখ্যার অর্ধেক টিকিট বিক্রি শুরু হয়। সীমিত সংখ্যক টিকিটের ৫০ শতাংশ অনলাইনে এবং বাকিটা কাউন্টার থেকে কেনা যাবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, কোথাও কোনও স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। আমরাও বলেছিলাম, সব আসনে যাত্রী পরিবহন করা হোক, কিন্তু তাতে যাতে স্বাস্থ্যবিধি পরিপূর্ণভাবে পরিপালন করা হয়। সেদিকে সরকারের নজরদারি রাখতে হবে। কিন্তু এগুলোতে কেউ নজর রাখছেন না, যে কারণে করোনা মহামারি আরও ছড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।