শিল্পকলার ডিজিকে জিজ্ঞাসাবাদ

বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে: দুদক সচিব

কোটি টাকা আত্মসাৎ ও অর্থপাচারের অভিযোগে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রবিবার (১৬ জানুয়ারি) সকাল দশটা থেকে দুপুর দুটা পর্যন্ত তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দুদক সচিব মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, একটি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালককে আমাদের অনুসন্ধানকারী দল জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তার বক্তব্য ও নথিপত্র বিশ্লেষণ করা হবে। বিশ্লেষণ শেষে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দুদক সচিব বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই অনুসন্ধান করা হচ্ছে। অভিযোগ যাচাই-বাছাই করার পর আমাদের মনে হয়েছে আরও অনুসন্ধান দরকার। তাকে (লিয়াকত আলী লাকী) প্রয়োজনীয় নথিপত্র দাখিল করতে বলা হয়েছিল। তিনি তা করেছেন। এখন অনুসন্ধানকারী দল এসব বিশ্লেষণ করবেন। যদি আরও নথির প্রয়োজন হয়, সেটাও দাখিল করতে বলা হবে।

দুদক কার্যালয়ে লিয়াকত আলী লাকী (ছবি: সংগৃহীত)

এদিকে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে দাবি করেছেন লিয়াকত আলী লাকী। দুদক কার্যালয় থেকে বের হওয়ার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যে ২৬ কোটি টাকা লোপাটের কথা বলা হচ্ছে। তা ঠিক নয়। আমি একটা বিল পরিশোধ করিনি। কিন্তু বলা হচ্ছে বিল পরিশোধ করেছি। তাহলে তো বস্তুনিষ্ঠতা থাকলো না।’

তিনি বলেন, ‘আপনারা যে ২৬ কোটি টাকার বলছেন, তা ২১ কোটি হবে। এর মধ্যে ৮ কোটি টাকা ফেরত দিয়েছি। দেড় কোটি টাকা ভ্যাট-ট্যাক্স দিয়েছি। বাকি ১২ কোটি টাকা আমার সংস্থার বেতন-ভাতা, বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে ব্যয় হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এখানে প্রায় এক দেড় কোটি টাকায় মন্ত্রণালয়ের বিল পরিশোধ করেছি। আন্তর্জাতিক অনেক প্রোগ্রাম হয়েছে। মন্ত্রণালয় যে অর্থ দিয়েছিল সেটার বিপরীতে বিলগুলো পরিশোধ করতে হয়েছে।’

ভুয়া বিল-ভাউচার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের আপ্যায়ন উপ-কমিটির কনভেনর ছিলেন নওশাদ সাহেব। সেই কমিটি এটি উপস্থাপন করেছে। আমি সেই অনুষ্ঠানের কাজে ব্যস্ত ছিলাম। দেখলাম যে, দুটি বিল নিয়ে আমার কাছে প্রশ্ন এসেছে। আমি বিলে কোনও স্বাক্ষর করিনি।’

পরিচালককে সচিব বানানো ও ৩০ জুনের মধ্যে টাকা তুলে নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘শিল্পকলায় গত ৪৭ বছরে এমন ১৫ জনকে সচিবের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। দেশের অনেক সংস্থাতেই ৩০ জুনের মধ্যে অনেক কিছু সমাপ্ত করা হয়। আগে যে সচিব ছিলেন, তিনি ২০০ নথি পেন্ডিং রেখে গিয়েছিলেন। আমার যে গরিব কর্মী তাদের যদি বেতন না দেই, তারা তো মারা যাবে।’

বিভিন্ন ব্যক্তির নামে ইস্যু করা চেক সম্পর্কে বলেন, ‘এটা ছিল নৃত্য ও সংগীত নির্মাণের বিষয়। এসব নৃত্য ও সংগীত নিয়ে আগামী ২০, ২১, ২২ তারিখে প্রোগ্রাম হতে যাচ্ছে। সেখানে উত্তর পেয়ে যাবেন।’