বেড়েছে ইয়াবা-গাঁজার আমদানি, আইস নিয়েও চিন্তা

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর, পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), র‌্যাপিড একশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) ও বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড—এ সব সংস্থা ২০২১ সালে (নভেম্বর পর্যন্ত) মাদকের বিরুদ্ধে ৮৬ হাজার ২৮৪টি অভিযান চালিয়েছে। গড়ে প্রতি মাসে প্রায় আট হাজার অভিযান চালানো হলেও কমানো যাচ্ছে না মাদকের আনাগোনা। এর মাঝে বেড়ে চলেছে গাঁজা ও ইয়াবার আমদানি। নতুন করে মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে আইস তথা ক্রিস্টাল মেথ। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ও সংশ্লিষ্ট বাহিনীগুলোর সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।

গত বছর মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার হয় ১ লাখ ১২ হাজার ৬০৩ জন। উদ্ধার করা হয় ৪ কোটি ৮৩ লাখ ৮৩ হাজার ৯০৬ পিস ইয়াবা, ৪১৫ কেজি হেরোইন, দেড় কেজি কোকেন, ৬৯ কেজি আফিম, ৭৫ হাজার ৯৮০ কেজি গাঁজা, ৫ লাখ ৩২ হাজার ৭৩০ বোতল ফেনসিডিল, ২ লাখ ৫ হাজার ৩১৪ বোতল বিদেশি মদ ও ৮৯ হাজার ৭৪টি ইনজেকটিং ড্রাগ।

র‌্যাবের অভিযানে এখন পর্যন্ত ১৯ কেজি আইস উদ্ধার হয়েছে। কোস্টগার্ড উদ্ধার করেছে ১ কেজি আইস। ২০২১ সালে প্রায় ১৩ কেজি আইস তথা ক্রিস্টাল মেথ উদ্ধার করেছে বিজিবি। এ ছাড়া মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর উদ্ধার করেছে ৪ কেজি আইস।

তিন বছরে মাদকবিরোধী অভিযান ও গ্রেফতারবাংলাদেশ পুলিশ সদর দফতরের গণমাধ্যম শাখার এআইজি মো. কামরুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, মাদক নিয়ন্ত্রণ একটি চলমান প্রক্রিয়া। এর বিরুদ্ধে আমরা জিরো টলারেন্স নীতিতে চলি। কারবারিরা যতই কৌশল নিয়ে থাকুক গোপন তথ্যের ভিত্তিতে তাদের গ্রেফতার করছি।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, র‌্যাব মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি সচেতনতামূলক কার্যক্রমও চালিয়ে আসছে। কারবারিদের ওপর নজরদারিও অব্যাহত আছে।

তিন বছরে গাঁজা উদ্ধারঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. জিয়া রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, মাদক নিয়ন্ত্রণ করতে হলে সীমান্তে নজরদারি বাড়াতে। তা না হলে নানা ফাঁকফোকর দিয়ে দেশে মাদক ঢুকবেই। মাদক নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে। শুধু বাহককে ধরে মাদক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। পেছনে যারা জড়িত তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে হবে।

তিন বছরে অভিযান ও গ্রেফতার

২০২১ সালে ৮৬ হাজার ২৮৪টি অভিযানে গ্রেফতার হয় ১ লাখ ১২ হাজার ৬০৩ জন। ২০২০ সালে ৮৫ হাজার ৭১৮টি অভিযানে গ্রেফতার ১ লাখ ১৩ হাজার ৫৪৩ জন। ২০১৯ সালে ১ লাখ ২৪ হাজার ৯৮টি অভিযানে গ্রেফতার হয় ১ লাখ ৬২ হাজার ৮৪৭ জন।

তিন বছরে ইয়াবা উদ্ধার২০২১ সালে ইয়াবা উদ্ধার হয় ৪ কোটি ৮৩ লাখ ৮৩ হাজার ৯০৬ পিস। ২০২০ সাথে উদ্ধার ছিল ৩ কোটি ৬৩ লাখ ৮১ হাজার ১৭ পিস। ২০১৯ সালে ৩ কোটি ৪ লাখ ৪৬ হাজার ৩২৮ পিস।

২০২১ সালে হেরোইন উদ্ধার হয় ২১৬ কেজি। ২০২০ সালে ২১১ কেজি। ২০১৯ সালে ৩২৪ কেজি।

২০২১ সালে গাঁজা উদ্ধার হয় ৭৫ হাজার ৯৭৯ কেজি। ২০২০ সালে ৫০ হাজার ৭৯ কেজি। ২০১৯ সালে ৩২ হাজার ৬৫৭ কেজি।

৫ লাখ ৩২ হাজার ৭৩০ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার হয় ২০২১ সালে। ২০২০ সালে ১০ লাখ ৭ হাজার ৯৭৭ বোতল ও ২০১৯ সালে উদ্ধার হয় ৯ লাখ ৭৬ হাজার ৬৬৩ বোতল।